Health

করোনা নির্ণয়ে RTPCR এ ৩০% বা তার বেশি ভুল রেজাল্ট আসে !!

করোনাভা’ইরাসের উপস্থিতি নির্ণয়ে RTPCR কতটুকু সঠিক, তা নিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও ডায়াগনস্টিক সায়েন্সের সব নির্ণায়ক বিবেচনায় নিলে করোনাভা’ইরাসের উপস্থিতি যাচাইয়ে RT-PCR-ই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি, তাই বলে এটি শতভাগ সঠিক কোনো পদ্ধতি নয়। এই পদ্ধতির সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে এটি খুবই specific, যা কেবল করোনাভা’ইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় করবে, অন্য কিছুর নয়।

এই পদ্বতিতে যদি কারো দেহে করোনাভা’ইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় হয় তবে ধরে নিতে হবে তিনি নিশ্চিতভাবে এই ভা’ইরাস দ্বারা আ’ক্রান্ত। যার অর্থ হচ্ছে এই পদ্ধতিতে falls positive রেজাল্ট হওয়ার সুযোগ নেই। তবে নমুনা প্রক্রিয়ার সময় কোনো কারণে যদি cross-contamination হয় সে ক্ষেত্রে falls positive রেজাল্ট হওয়ার সুযোগ থাকে। এই পদ্বতির আরও একটি ভালো দিক হচ্ছে এটি খুব অল্প পরিমাণ নমুনাও নির্ণয় করতে পারে। সর্বোপরি, কারো শরীরে রোগ চলাকালীন করোনাভা’ইরাস সক্রিয় অবস্থান করছে কিনা তা জানার সবচেয়ে ভালো পদ্ধতিও RTPCR।

এত ভালো গুণ থাকা সত্ত্বেও এই পদ্বতি কিন্তু ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। ইতিমধ্যে ব্যাপক false negative রেজাল্ট বিশ্বজুড়ে উক্ত পদ্ধতির কার্যকারিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার RTPCR পরীক্ষায় ৩০%-থেকে অধিক false negative আসে। যার অর্থ হচ্ছে ১০০ জন নিশ্চিত করোনা রোগীকে যদি আপনি RTPCR পরীক্ষা করান, তাহলে আপনি উক্ত ভা’ইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় করতে পারবেন মাত্র ৭০ জন বা তারও চেয়ে কম নমুনার ক্ষেত্রে।

চীনের উহানের একটি ঘটনা বলি। করোনার উপসর্গ নিয়ে একজন রোগী একটি হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তার প্রাথমিক উপসর্গ এবং কিছু ডায়াগনস্টিকের পর করোনা বলে তাদের সন্দেহ করলে RTPCR করানোর সুপারিশ করেন। RTPCR-এর রেজাল্ট নেগেটিভ আসলে ডাক্তারগণ পুনরায় RTPCR পরীক্ষা করান। কিন্তু এবারও তার রেজাল্ট নেগেটিভ। প্রাথমিক উপসর্গ এবং সিটি স্ক্যানের উপর ভিত্তি করে তারা পুনরায় তৃতীয়বারের মতো RTPCR পরীক্ষা করান এবং positive রেজাল্ট পান। এই চিত্র কেবল চীনের একার নয়, পশ্চিমা বিশ্বেও প্রকট।

এত ফলস নেগেটিভ রেজাল্টের পিছনে সম্ভাব্য কারণ জানার আগে কিভাবে RTPCR কাজ করে তা একটু জেনে নেই। RTPCR পদ্ধতিতে করোনাভা’ইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় প্রক্রিয়াকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।

প্রথমত, নমুনা সংগ্রহ এবং RNA আলাদাকরণ,দ্বিতীয়ত, RNA কে পরিপূরক DNA-তে রূপান্তর এবংতৃতীয়ত, PCR প্রক্রিয়ায় উক্ত পরিপূরক DNA থেকে উদ্দিষ্ট কোনোঅংশ বহুগুণে বৃদ্ধি করে তার সংকেত নিরুপণ।

এই পুরো প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পাদনের জন্য শুরুতেই প্রয়োজন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ জনবল। তাছাড়া প্রতিটি ধাপ সঠিকভাবে সম্পাদিত হচ্ছে কিনা তা জানার জন্য দরকার বিভিন্ন ধরনের control. পজেটিভ control, নেগেটিভ কন্ট্রোল এবং পজেটিভ extraction কন্ট্রোল ছাড়া পুরো প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পাদিত হয়েছে কিনা তা জানা দুস্কর। বিভিন্ন ধরনের নমুনা যেমন, nasal swab, oral swab, sputum এবং broncho-alveolar fluid দ্বারাও RTPCR-এর রেজাল্ট প্রভাবিত হয়। গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে যে nasal swab, oral swab কিংবা sputum থেকে সংগৃহিত নমুনা ৩০%-র মতো ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট তৈরি করে। এ ক্ষেত্রে broncho alveolar fluid প্রায় ৯৫% বা আরও বেশি সঠিক রেজাল্ট প্রদান করে। Nasal swab, oral swab কিংবা sputum-এর একটি সমস্যা হচ্ছে এ সব নমুনায় ভা’ইরাসের সংখ্যা খুব কম থাকে এবং RNA আলাদাকরণ প্রক্রিয়ায় সতর্ক না থাকলে RNA বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

করোনাভা’ইরাসের উপস্থিতি নির্ণয়ে বিপুল নেগেটিভ রেজাল্টের মূলে রয়েছে এর আকস্মিক আগমন। জরুরি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘমেয়াদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া এই পদ্বতির ব্যবহার ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। আবার কোনো বিশেষ ল্যাবে উদ্ভাবিত পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যাপকভাবে মাঠজুড়ে কাজ নাও করতে পারে। তাছাড়া ভা’ইরাসটির জিনোম RNA হওয়ায়, ভা’ইরাসটির বিপুল জিনোম বৈচিত্র্য, primer-এর অসামঞ্জস্যতা এবং পুরো প্রক্রিয়া দক্ষতা ও নিপুণতার সহিত সম্পাদনের আবশ্যিকতার কারণে false negative রেজাল্ট বন্ধ করা যাচ্ছে না।

আবার টেস্ট কীটের নিম্নমান এবং তড়িগড়ি করে বিপুলসংখক নমুনা পরীক্ষাও অনেক সময় ফলস নেগেটিভ রেজাল্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এমতাবস্থায় ‘ভা’ইরাসের সংক্রমণ নির্ণয়ে RTPCR-এর উপর একমাত্র নির্ভরশীল থাকা বাঞ্চনীয় নয়। প্রাথমিক উপসর্গ, ফুসফুসের CT স্ক্যান এবং RTPCR-রেজাল্টের সমন্বয় জরুরি। একই নমুনা দুটি ভিন্ন কিট দ্বারা দুটি সমান্তরাল মেশিনে পরীক্ষার মাধ্যমে false negative রেজাল্ট কমিয়ে আনা সম্ভব, কিন্তু সেটি যথেষ্ট সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ।

এখন ফুসফুসের CT স্ক্যানকে অনেকেই অধিকতর সঠিক মনে করছেন। false negative রেজাল্ট উপসর্গবিহীন করোনা বাহকের মতোই রোগটির সংক্রমণে মারাত্মক ভূমিকা রাখতে পারে। সুতরাং করোনা পরীক্ষায় RTPCR-এর রেজাল্ট নেগেটিভ হলেও কাউকে করোনামুক্ত ভাবার সুযোগ নেই।

লেখক: পোস্ট ডক্টরাল ফেলো, ইমার্জিং প্যাথোজেনস ইন্সটিটিউট, ফ্লোরিডা ও
সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সূত্রঃ যুগান্তর

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button