করোনা-ভাইরাস আতংকে উইঘুর মুসলিমদের জোর করে কাজে পাঠাচ্ছে চীন !!
করোনার ভয়াবহতা ভেবে চীন যখন গোটা দেশে সতর্কতা অবলম্বর করছে। ঠিক সেই মুহূর্তে সেখানকার সংখ্যালঘু গোষ্ঠী উইঘুর মুসলমানদের জোর-জবরদস্তি করে কারখানায় কাজ করানোর অভিযোগ উঠেছে দেশটির বিরুদ্ধে। উইঘুর মুসলমানদের জোর করে এমন ঝুঁকির মধ্যে ফেলার বিষয়টি উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, কাজে না গেলে কৌশল খাটিয়ে আটকে রাখা হচ্ছে তাদের।
কাজের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে আটক হয়ে থাকতে চায় না উইঘুররা। সে কারণে বিভিন্ন কারখানায় কাজ করতে বাধ্য হয় তারা। উইঘুর এক নারীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন ওই সাংবাদিক। উইঘুর নারী বলেছেন, কারখানার ভেতর সব জায়গায় ঘুরে বেড়ানো যায়। কিন্তু কোনোভাবেই বাইরে বের হওয়া যায় না।
এদিকে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক নাইক-এর একটি কারখানায় যেতে পেরেছিলেন। ওই কারখানা একেবারে কারাগারের মতো। চারপাশে কাঁটাতার রয়েছে, ওয়াচ টাওয়ার, ক্যামেরা এবং পুলিশ স্টেশন রয়েছে।এএসপিআই বলছে, চীনের নয়টি প্রদেশে মোট ২৭টি কারখানায় উইঘুর মুসলমানদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত পরিচিত ৮৩টি ব্র্যান্ডের পণ্য তৈরি কাজ করছে উইঘুররা। নাইক, অ্যাপল, ডেল থেকে শুরু করে অন্যান্য নামকরা কোম্পানি রয়েছে সেই তালিকায়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটছে সেখানে।
অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট (এএসপিআই) বলছে, ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৮০ হাজারের বেশি উইঘুরকে শিনজিয়াং প্রদেশ থেকে কারখানায় কাজ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগকেই আটককেন্দ্র থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
এএসপিআই বলছে, জিনজিয়াং প্রদেশে সরকারিভাবে অসচ্ছলদেরকে সহায়তার নামে বিভিন্ন প্রকল্প চালু করে উইঘুরদের কাজ দেওয়ার কথা বলে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকি যারা আটককেন্দ্রে আছেন, তাদেরকেও কারিগরি শিক্ষা দেওয়ার দাবি করে চীন সরকার। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীন সরকার ঘোষণা দেয়, কারিগরি ক্যাম্পে (আসলে আটককেন্দ্র) অনেকেই স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছেন।
এর আগেও চীনে উইঘুর মুসলমানদের নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। লাখ লাখ উইঘুরকে ধরে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা আছে। ধর্ম পালন থেকে শুরু করে ধর্মীয় বিভিন্ন উপকরণ রাখতেও বিধিনিষেধ আরোপ করে চীন সরকার।