কর্মজীবী নারীদের জন্য দারুন সুখবর !!

সরকারের নতুন উদ্যোগে কর্মজীবী মায়েদের জন্য সুখবর আসছে। তাদের শিশুসন্তানকে নিয়ে কর্মক্ষেত্রে নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে দেশের সব জেলা, উপজেলা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক ভবনে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ৬ মাস থেকে ৮ বছরের শিশুদের ওই কেন্দ্রে রাখা যাবে। বিনামূল্যে পরিচালিত সরকারি ভর্তুকি দিয়ে সরকারি, বাণিজ্যিক এবং অলাভজনক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে এ চার ধরনের শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থাকবে। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে শিশু সেবাকারির অনুপাত হবে ৪:১ জন। কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন ছাড়া কোনো শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করাই যাবে না। কোনো দন্ডিত অপরাধী শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের নিবন্ধন ও নিবন্ধন সনদ পাবেন না। আইন ভঙ্গ করলে থাকছে অর্থ ও কারাদন্ডের বিধান। এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া প্রস্তুত করেছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। যা শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন ২০১৯ নামে অভিহিত হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আইন প্রণয়নের বিষয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত সচিব শেখ রফিকুল ইসলাম আইনটি প্রণয়নের কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে এখনও কিছু বলতে পারব না। তিনি মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, দেশে কর্মজীবী ও পেশাজীবী মায়েদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। একই সঙ্গে সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মায়েদের শিশুসন্তানের দিবাকালিন নিরাপদ ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিচর্যার চাহিদাও বাড়ছে সমানে। পক্ষান্তরে যৌথ পরিবার প্রথা বিলুপ্তপ্রায় এবং একক পরিবার বাড়ছে হু হু করে। সেই ক্ষেত্রে শিশুদের পরিচর্যায় সেবাকারির অভাবও দেখা দিয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন সুশৃঙ্খল ব্যবস্থপনা এবং প্রদেয় সেবার গুণগতমান নিশ্চিত করতে একটি আইনি কাঠামো থাকা সময়ের দাবি। এরই মধ্যে আইনের একটি খসড়া প্রস্তুত করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আইনে বিস্তারিত কিছু না রেখে এক লাইনে বলে দেওয়া হয়েছে তা বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে।

খসড়া আইনের চতুর্থ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, দিবাযত্ন কেন্দ্রে ভর্তি হওয়া শিশুরা কেন্দ্রে অবস্থানকালীন সার্বিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি হবে। শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিশ্চিত করতে হবে। আইনের তৃতীয় অধ্যায়ের শেষাংশে বলা হয়েছে, সরকারি নিবন্ধনপ্রাপ্ত শিশু দিবা ন্দ্র সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের পরিচালককে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ যে কোনো নির্দেশ প্রদান করতে পারবে। নিবন্ধনের কোনো শর্ত ভঙ্গের কারণে কোনো নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দিবাযত্ন কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিতে পারবে। আইনের চতুর্থ অধ্যায়ে বলা হয়েছে তৃতীয় অধ্যায়ের শেষাংশে যে শর্তের কথা বলা হয়েছে তা প্রতিপালন করতে বলা হয়েছে, তা করতে না পরলে নিবন্ধন বাতিল করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দিবাযত্ন কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য প্রবেশ পথে ও অভ্যন্তরে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। ওই ক্যামেরা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

এই বিধান প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে নিবন্ধন বাতিল করে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার অর্থদন্ড করা হবে। নিবন্ধন ছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করলে, সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার অর্থদন্ড এবং অনধিক দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা একই সঙ্গে দুইটি দন্ড দেওয়া হবে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার অর্থদন্ড এবং সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা একই সঙ্গে উভয়দন্ড আরোপ করা হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *