কোরআন মাহফিলে দুই চাকমা যুবকের ইসলাম গ্রহণ !!
পেকুয়া দিগন্ত ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত তাফসীরুল কোরআন মাহফিল লাখ শ্রোতার উপস্থিতিতে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মাহফিলে ইসলামের বয়ানে উদ্ভোদ্ধ হয়ে দুই অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। বিশাল এই তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে নব মুসলিমরা হলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষীধন চাকমা (৩৬) ও উষাময় চাকমা (২২)। ইসলাম গ্রহণ করার পর লক্ষীধন চাকমা তার নাম রাখেন লোকমান হোসেন এবং উষাময় চাকমা তার নাম রবিউল ইসলাম রেখেছেন।
গত শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ হয় মাহফিলের মাঠ। শুরুতেই আশেপাশ ৩ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। মাহফিলের শেষের দিকে যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই তৌহিদি জনতার ঢেউ সামলাতে পুলিশ-সেচ্চাসেবকদের তৎপরতা ছিল দৃশ্যমান।
সমাবেশে অধিবেশন অনুসারে সভাপতিত্ব করেন বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এইচ.এম.বদিউল আলম ও উত্তর মেহেরনামা মনিরুল উলুম মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ। পেকুয়া দিগন্ত ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা ও পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুজ্জামান মনজুর সঞ্চালনায় এতে মানবতার সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ হেদায়ত গ্রন্থ আল কোরআন ও হাদিস থেকে উপস্থিত তৌহিদি জনতার উদ্দেশ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিশ্বনন্দিত কোরআনের খাদেম তারাকা বক্তা ড.লুৎফর রহমান, আল্লামা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী,মাওলানা মুফতি হাফেজ মোহাম্মদ আমীর হামজা, মাওলানা সাদীকুর রহমান আল আজহারী, শায়খ মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
এতে আলোচকরা বলেন,জমিন আল্লাহর তাই বিধান চাই আল্লাহর। আল্লাহর বিধান কার্যকর হলে মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন হবে না,সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। আর,একটি সমৃদ্ধ ও কল্যাণময় পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত হবে। আবেগ দিয়ে ইসলাম কায়েম হবে না। আর,ব্যক্তি অথবা কোন দলের জন্য ইসলামী নীতি কখনো পরিবর্তন হবে না। বক্তারা বলেন, অপসংস্কৃতিতে ভরে গেছে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব। তাই, জাতির দিকনির্দেশক আলেমদেরকে এ ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তস্নাত এই বাংলাদেশ যারাই কোরআন হাদীস অর্থাৎ বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এর দেখানো জীবন ব্যবস্থা অনুযায়ী পরিচালনা করবে তাদেরকে আলেম সমাজ সহযোগিতা করবে।
মাহফিলে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কোরআন সাইয়্যেদ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন তাহের জাবেরী আল মাদানী, আল্লামা তারিক মুনাওয়ার এবং মাওলানা মিজানুর রহমান আল আজহারী উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তাদেরকে না দেখে হতাশা লক্ষ্য করা যায় দর্শকদের মাঝে। জানা যায়,আল্লামা তারিক মুনাওয়ার এবং মাওলানা মিজানুর রহমান আল আজহারীকে ছাড়াই মাহফিলের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। আর, সাইয়্যেদ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন তাহের জাবেরী আল মাদানী অসুস্থতার কারণে মাহফিলে উপস্থিত হতে পারেন নি।
বিশাল এই তাফসীরুল কোরআন মাহফিল সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় দিগন্ত ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ মহান আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া জ্ঞাপন করে, প্রশাসনসহ যে সকল ব্যক্তি মাহফিলে সফল করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। যে সকল তৌহিদি জনতা পঙ্গপালের মত আল্লাহ এবং রাসুলের প্রেমে ছুটে এসে মাহফিল সম্পন্ন করেছেন তাদের প্রতিও অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আথিতেয়তায় কোন ঘাটতি থাকলে তার জন্য বিনয়ের সহিত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। একইসাথে প্রতি বছর আরো বিশাল পরিসরে তাফসীরুল কোরআন মাহফিলের আয়োজন করতে পারেন তার জন্য সকলের আন্তরিক দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।