গোল্ডেন ভিসা চালু করল সৌদি, জেনে নিন বিস্তারিত…

স্থায়ীভাবে সৌদি আরবে বসবাসের জন্য দেশটির সরকার ‘গোল্ডেন ভিসা’ চালু করেছে। এই গোল্ডেন ভিসার আওতায় সৌদিতে বিত্তশালী মানুষেরা দেশটিতে বসবাস করতে পারবেন। শুরুতেই এ ভিসা বর্তমানে ৮০ জন প্রবাসী পেয়েছেন। তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী তারা দেশটিতে থাকতে পারবেন।

গত সোমবার থেকে সৌদি আরব তাদের গোল্ডেন ভিসা প্রদান করে।

লোভনীয় এ সুবিধা ভোগ করার জন্য হাজার হাজার প্রবাসী আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্য থেকে যাচাই বাচাই করে ইতিমধ্যে কয়েকজন প্রবাসীকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

তবে সৌদি আরবের স্থায়ী গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার জন্য তাদের গুণতে হবে ৮০ লাখ রিয়াল (২১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার)। আর এক বছরের জন্য স্থায়ী বাসিন্দা হতে চাইলে পরিশোধ করতে হবে এক লাখ রিয়াল (২৬ হাজার ৭০০ মার্কিন ডলার), যা পরে নবায়ন করা যাবে।

সৌদি আরব তেল বাণিজ্যের বাইরে একটু ভিন্নধর্মী বাণিজ্যের লক্ষ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গোল্ডেন ভিসার সুবিধাপ্রাপ্ত বিনিয়োগকারীরা সেখানে স্বাধীনভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারবেন।

গোল্ডেন ভিসা প্রদানকারী রাষ্ট্রের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০৮ সালে সবচেয়ে আগে এ সুবিধা দেয় যুক্তরাজ্য। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীন, রাশিয়া ও ভারতের অনেক বিনিয়োগকারী গোল্ডেন ভিসার মাধ্যমে দেশটির স্থায়ী বাসিন্দা হতে পেরেছিলেন। তবে গত বছর ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ইংল্যান্ড এ ভিসা ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। কালো টাকার মালিকদের সুযোগ না দিতেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানান তারা।

থাইল্যান্ড, লাটভিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তত চারটি রাষ্ট্র গোল্ডেন ভিসার বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে। যেকোনো বিত্তশালী ব্যক্তি চাইলেই সেসব দেশের স্থায়ী নাগরিকত্ব কিনে নিতে পারবেন। এর ফলে ভাষাগত দক্ষতা বা বাসিন্দা হওয়ার যেসব জটিলতা ছিল সেসব আর থাকছে না। শুধুমাত্র টাকার বিনিময়েই কাঙ্ক্ষিত দেশে থাকা যাবে।

গত মাসে মন্টিনিগ্রোতেও গোল্ডেন ভিসা চালু করা হয়। সেখানকার গোল্ডেন ভিসা পেতে চাইলে প্রথম তিন বছরে লাগবে প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার। পানামাতে কেউ থাকতে চাইলে তাকে বিনিয়োগ করতে হবে মাত্র ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। তবে শর্ত একটাই, বিনিয়োগটা অবশ্যই করতে হবে তাদের সেগুন কাঠের কারখানায়।

কিন্তু যুক্তরাজ্যের গোল্ডেন ভিসার নিয়মগুলোতে বেশ কড়াকড়ি ছিল। ইইউ এর বাইরের নাগরিককে দেশটির এ ভিসা পেতে হলে তাদের অর্থনীতিতে বাধ্যতামূলকভাবে দুই মিলিয়ন ইউরো (২ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) যোগ করতে হবে।

তবে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা জানিয়েছে, অনেক অপরাধী এবং কালো টাকার মালিক নিজেদের আড়াল করার জন্য গোল্ডেন ভিসার মতো সুবর্ণ সুযোগ লুফে নিচ্ছে। এতে করে অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। এমনও দেখা যায় যে, গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশিই কোনো না কোনো গুরুতর অপরাধকর্মের সঙ্গে জড়িত।

এতসব বিতর্কের পরও গোল্ডেন ভিসার জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। একদিকে যেমন লাভবান হচ্ছে ভিসা প্রদানকারী দেশগুলো তেমনি অন্যদিকে স্বপ্নপূরণ হচ্ছে ধনকুবেরদের।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *