গ্রামীণ সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে একটি ব্যতিক্রমী বিয়ে !!

হেলিকপ্টারে করে বিয়ে, হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে কিংবা বরের বাড়িতে কনের যাত্রা। আবার মোটর সাইকেল চালিয়ে বরের বাড়িতে কনের যাওয়াসহ শখের অনেক বিয়ে ইতোমধ্যে দেশজুড়ে ভা’ইরাল হয়েছে।বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ব্যতিক্রমী অনেক কিছুই হচ্ছে। শুধু শখ থেকে নয় গ্রামীণ সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে তেমনি একটি ব্যতিক্রমী বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

চিরায়ত গ্রাম বাংলার হারানো ঐতিহ্য ঘোড়া ও পালকির ব্যবহার হয়েছে একটি বিয়েতে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভা’ইরাল হয়েছে।শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) বিকালে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চণ্ডিপাশা ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামে ব্যতিক্রমী এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, উপজেলার চণ্ডিপাশা ইউনিয়নের কোদালিয়া মাস্টার বাড়ি গ্রামের জাকির হোসেন এর ছেলে আশরাফুল আনোয়ার রোজেন। যিনি যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংস্থায় কর্মরত।ছোটবেলা থেকেই তার শখ ছিলো বিয়ের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখবেন। সেজন্য তিনি ঘোড়ায় চড়ে শ্বশুর বাড়িতে যাবেন। আর পালকিতে করে বউ আনবেন।

অবশেষে সেই শখ পূরণ হলো তার। গত শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) পারিবারিকভাবে একই ইউনিয়নের পাশের ঘাগড়া গ্রামে বিয়ে করেন।উভয় পরিবার রোজেন এর শখ পূরণে এবং বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে ব্যতিক্রমী এ বিয়ের আয়োজন করেন।কনে ঘাগড়া গ্রামের ড. ফরিদ আহম্মদ সৌবহানীর কন্যা নাবিলা সৌবহানী। যিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন।

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) জুমআ নামাজের পর ঘোড়ায় চড়ে নিজ বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে বরযাত্রী বের হয়। ঘোড়ায় চড়ে গ্রামীণ মেঠোপথ মাড়িয়ে দুই কিলোমিটার দূরের ঘাগড়া গ্রামে যান বর রোজেন।সেখানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পালকিতে করে বউ নিয়ে বাড়ি ফেরেন রোজেন।এর আগে ঘোড়ার চড়া বর দেখতে ও বিভিন্ন জাতের ফুল দিয়ে সাজানো গ্রামীণ পালকিতে বউ দেখতে শতশত উৎসুক নারী-পুরুষ ও শিশু বিয়ে বাড়িতে ভীড় জমান। শুধু তাই নয় ঘোড়া-পালকির বিয়ে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভা’ইরাল।

এ ব্যাপারে বর আশরাফুল আনোয়ার রোজেন বলেন, শখ থেকেই এমন আয়োজন। বিয়ের দিনটিকে স্মরণ রাখতেই ঘোড়া-পালকিতে বিয়ে। শখের পাশাপাশি গ্রামীণ সংস্কৃতি ধরে রাখতেই ব্যতিক্রমী এ আয়োজন। যদিও চিরায়ত গ্রাম বাংলার ঐহিত্য এখন বিলুপ্তির পথে।

তিনি জানান, ঘোড়া সংগ্রহ করতে হয়েছে পার্শ্ববর্তী কটিয়াদী উপজেলা থেকে এবং পালকি ও বেহারা সংগ্রহ করতে হয়েছে নিকলী থেকে।হারানো ঐতিহ্যে জীবনের বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে পেরে তিনি উচ্ছ্বসিত বলেও জানিয়েছেন। দাম্পত্য জীবনে যেন সুখী হন সেজন্য তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *