জেনে নিন ও উচ্চ রক্তচাপের হৃদরোগ রোগীদের করোনার ঝুঁকি কতটা ??

করোনাভা’ইরাস নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানীরা প্রথম থেকেই বলে আসছেন যারা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাদের করোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এসব রোগী যদি এই ভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত হন, তবে তাদের মৃ’ত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়।

দেশে করোনাভা’ইরাসে যে ৬ জনের মৃ’ত্যু হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগসহ জটিল অনেক রোগে ভুগছিলেন।তাই এসব রোগীর করোনার সংক্রমণ এড়াতে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের করোনা থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ডা. রবীন চক্রবর্তী।

ডা. রবীন চক্রবর্তীর মতে, হৃদযন্ত্রে অনেক কারণে করোনার সংক্রমণ হতে পারে। তার মধ্যে একটি হলো এই ভা’ইরাস সরাসরি হৃদযন্ত্রকে আ’ক্রান্ত করতে পারে। তা ৩ থেকে ৪ ভাবে হতে পারে। এর মধ্যে একটা হলো মায়োকার্ডাইটিসের কারণে প্রদাহ (ইনফ্লেমড)। এটি প্রথমেই হৃদযন্ত্রকে আ’ক্রান্ত করে না। ফুসফুস এবং অন্যান্য অঙ্গে সংক্রমণ হলে এমন হয়। তবে এটা খুব কম মানুষের হয়।

তিনি জানান, ওই মায়োকার্ডাইটিস থেকে হৃদযন্ত্রের পেশির প্রদাহ হয়। আর এখান থেকে কার্ডিয়াক এরিথমিয়া হতে পারে। আর যা হতে পারে সেটি হলো এটি হার্টকে আঘাত করতে পারে অর্থাৎ অ্যাকিউট কার্ডিয়াক ইনজুরি। যারা হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ ভুগছেন, স্ট্রোক হয়েছে, বাইপাস সার্জারি হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে কোভিড–১৯ আরও বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারে।

রবীন চক্রবর্তী বলেন, যারা প্রবীণ, যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে ও নিয়মিত ধূমপান করেন তাদের মধ্যে সহজেই করোনার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। হয়তো জ্বর বা একটু কাশিও হতে পারে। সেখান থেকে নিউমোনিয়া হওয়ার কথা। তা না হয়ে তাদের বুকে তীব্র ব্যথা, চাপ অনুভব হতে পারে। ফলে মনে হতে পারে সেটি একটি হার্টঅ্যাটাক।

এ সময় ইসিজি করতে দেখা যায়, সেটি হার্টঅ্যাটাকের ইসিজির মতো দেখতে বা কার্ডিয়াক এনজাইম ট্রপোনিন টেস্ট, সিপিকে–এমবি অনেক সময় বেশি থাকে। অনেক সময় ভুলবশত হার্টঅ্যাটাক রোগীর মতো চিকিৎসা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জানা যায়, সেটি হার্টঅ্যাটাক নয়। সেটি করোনাভা’ইরাসের সংক্রমণ।

তিনি বলেন, এ ধরনের সমস্যা হলে আমরা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাই। আবার অনেকে প্রপিল্যাক্সিসের জন্য হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খান। তবে এসব ওষুধ করোনাভা’ইরাসকে ত্বরান্বিত করে কিনা বা উপসর্গকে বাড়িয়ে তোলে কিনা, সেটি কিন্তু পুরোপুরি ঠিক নয়।তাই হৃদযন্ত্র করোনাভা’ইরাস থেকে নানাভাবে আ’ক্রান্ত হতে পারে ও বিকল হতে পারে।

তিনি জানান, যাদের হার্টের সমস্যা আছে, তাদের যদি করোনার অসুখ হয়, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। পরে হৃদযন্ত্র সত্যিই যদি খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেমন অ্যাকিউট কার্ডিয়াক ইনজুরি হয়, তার থেকে যদি হার্ট ফেলিওর হয়, অনেক সময় কার্ডিওজেনিক শক ও এমনকি মৃ’ত্যুও হতে পারে।

তথ্যসূত্র: কলকাতা২৪

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *