Islamic

টাঙ্গাইলে কবরের পাশে ৯১ বছর ধরে অবিরাম চলছে কোরআন তেলাওয়াত !!

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় রয়েছে ৯১ বছরের পুরনো একটি কবর। আর সে কবরের পাশে বিগত ৯১ বছর ধরেই চলছে কোরআন তেলাওয়াত।

ঝড়, বৃষ্টি, দুর্যোগ বা যুদ্ধকালীন সময়েও বাদ দেয়া হয়নি তেলাওয়াত। অবিরাম চলছে তো চলছেই। এক জন পড়ে উঠে গেল অন্যজন কোরআন নিয়ে বসছেন। কোরআন আয়াতের সেই সমধুর সুর সেই কবরের চারিপাশে প্রতিনিয়তই ধ্বনিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর সেই কবরটি নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী। ১৯২৯ সালের ১৭ এপ্রিল ৬৫ বছর বয়সে তিনি মারা গেলে নিজ বাড়ির মসজিদ চত্বরে সমাহিত করা হয় তাকে। সেই সময় থেকেই তার কবরের পাশে বসে এই তেলাওয়াত চলছে।

ধনবাড়ীর এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। তিনি অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলিম মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ছিলেন।

১৯১১ সালের (২৯ আগস্ট) ঢাকার কার্জন হলে নবাব সলিমুল্লাহর পাশাপাশি নওয়াব আলী চৌধুরীও ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। সে দিন বাংলার এ দুই নবাব ল্যান্সলট হেয়ারের বিদায় এবং চার্লস বেইলির যোগদান উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৃথক দুইটি মানপত্রে এ দাবি পেশ করেন। এরপর ১৯১৭ সালের ৭ মার্চ ইম্পেরিয়াল কাউন্সিলের সভায় ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি উপস্থাপন করেন নওয়াব আলী চৌধুরী।

শুধু দাবিই নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে অর্থাভাব দেখা দিলে নিজ জমিদারির একাংশ বন্ধক রেখে এককালীন ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে সাহায্য করেন ধনবাড়ীর এই নবাব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিনেট ভবনের নাম ‘সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন’ নামকরণ করেন।

শিক্ষানুরাগী, দানবীর নওয়াব আলীর কবরের পাশে সার্বক্ষণিক কোরআন তেলাওয়াত প্রসঙ্গে ধনবাড়ী মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মওলানা মুফতি ইদ্রিস হোসাইন সময়ের কন্ঠস্বর’কে জানান, প্রতিদিন চারজন হাফেজ কোরআন পাঠের দায়িত্বে থাকেন। তারা পালাক্রমে তেলাওয়াত করেন।

বর্তমানে যে চারজন কোরআন তেলাওয়াত করছেন তারা হলেন, হাফেজ মো: আব্দুস সামাদ, মো. কামরুজ্জামান, আবু হানিফ ও হেদায়েত হোসেন।

এদিকে, হাফেজ মো. আব্দুস সামাদ জানান, সকাল ৬ টা থেকে সাড়ে ৮ টা, সাড়ে ৮ টা থেকে বেলা ১১টা, বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড় টা, দুপুর দেড় টা থেকে বিকে ৪ টা এবং বিকেল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা। এভাবে আবার রাতেও শুরু হয়। একেক শিফটে একেক জন কোরআন পাঠের দায়িত্ব থাকেন।

তবে, এ চারজনের কেউ অসুস্থ হলে অথবা ছুটিতে থাকলে মসজিদের পাশেই হিফজখানা থেকে ছাত্রদের দিয়ে কোরআন তেলাওয়াত করানো হয়। তেলাওয়াতকারিরা এখানে কোরআন তেলাওয়াতের পাশাপাশি হিফজখানায় শিক্ষকতা করেন। আর সেখান থেকেই তাদের সম্মানী দেওয়া হয়।

নওয়াব আলী চৌধুরী মসজিদের একজন মুসল্লি জানান, আমার বয়স এখন ৫২ বছর। আমি আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই দেখি এখানে কোরআন পাঠ চলছে। আমার বাবাও এটাই দেখেছেন বলে জানিয়েছেন আমাকে।

এ প্রসঙ্গে নওয়াব আলী চৌধুরীর নাতনি জামাই আকবর উদ্দিন আহমেদ সময়ের কন্ঠস্ব’রকে বলেন, মৃত্যুর আগে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী তার কবরের জন্য যে জায়গা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়েছে এবং তার ইচ্ছা অনুযায়ী এই কোরআন পাঠ চলছে। এটি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

ধনবাড়ির এই নওয়াব আলী চৌধুরীর কবরের পাশে অবিরাম কোরআন তেলাওয়াতের বিষয়টি দেখতে অনেকেই দূর-দুরান্ত হতে আসেন।

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button