টিউশনির টাকায় পরিবার চালানো মেয়েটি করোনায় আ;ক্রান্ত !!

পাঁচ মাসে আগে ঢাকার একটি কলেজ থেকে এমবিএ শেষ করে চাকরিতে ঢোকার চেষ্টা করেছেন আফরিন (ছদ্মনাম)। কিন্তু মেধাবী হয়েও চাকরি পাননি তিনি। তার সারাটা জীবন লড়াইয়ের। ছয় সদস্যের পরিবার চলে তার টিউশনির টাকায়। এর মধ্যে করোনা আতঙ্কে সবার মতো তিনিও চলে যান লকডাউনে। টিউশনি বন্ধ; তাই অভাবের সংসারে সঙ্কট আরও বেড়ে যায়।

আফরিন নিয়মিত রক্তদাতা। গত ৩ এপ্রিল একজন মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিতে চলে যান ডেল্টা হাসপাতালে। কয়েকদিন পর নিজের মধ্যে করোনার উপসর্গ বুঝতে পেরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হাসপাতালে পরীক্ষা করান। রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে তার।ওই দিন হাসপাতালে যাওয়ার রিকশা ভাড়া ছিল না তার। পাশের বাসার একজনের কাছ থেকে ভাড়ার টাকা ধার নিয়েছিলেন। করোনা পজিটিভ আসায় গত শুক্রবার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

কিন্তু করোনার সঙ্গে লড়াই করা অবস্থায় পরিবারের চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠেছেন আফরিন। পরিচিত জনদের মোবাইল করে হাসপাতালের বিছানা থেকে পরিবারের জন্য সাহায্য চেয়ে কাঁদছেন।জানা গেছে, আফরিন পুরান ঢাকার নারিন্দার বাসিন্দা। তার বাবা মারা গেছেন আট বছর আগে। বড় ভাই কিছু দিন প্রবাসে ছিলেন। বিদেশে ঋণগ্রস্ত হয়ে ২০১৮ সালে দেশে ফিরে বেকার হয়ে পড়েন তিনি।

এরপর পরিবার চলে আফরিনের টিউশনির টাকায়। পরিবারে মা, ছোট বোন, ভাই-ভাবি এবং ভাতিজি রয়েছে তার। মুন্সিগঞ্জের লৌজজং উপজেলায় একসময় প্রচুর সম্পত্তি ছিল তাদের। কিন্তু নদীভাঙনে সব শেষ।কবি নজরুল সরকারি কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাঈন উদ্দিন আরিফ বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি নিজে তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি মেধাবী এবং টিউশনি করে সংসার চালান। এ অবস্থায় পরিবারের জন্য তিনি খুবই চিন্তিত। আমরা যতটা পারছি তাকে সহায়তা করছি। তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন; সেই প্রত্যাশা করছি। তার একটা ভালো চাকরি দরকার। বর্তমানে তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। কিন্তু মানসিকভাবে খুবই শক্ত। বার বার পরিবারকে সহায়তার কথা বলেছেন আফরিন।

আফরিনের বড় ভাই বলেন, সে স্বেচ্ছায় মানুষকে রক্ত দিতে ভালোবাসে। ৩ এপ্রিল ডেল্টা হাসপাতালে রক্ত দিতে গিয়েছিল আফরিন। এর আগে-পরে ঘরেই ছিল। কাউকে দোষ দিচ্ছি না। তবে ধারণা করছি এখানে থেকেই করোনায় আ’ক্রান্ত হয়েছে আফরিন।

সূত্রঃ জাগো নিউজ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *