ডিসির পরিচয়েই বড় হবে কুড়িয়ে পাওয়া এই নবজাতক !!

সম্প্রতি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর মহানুভবতায় ঠিকানা খুঁজে পেল ভৈরবে ভিক্ষুকের কাছে রেখে যাওয়া নবজাতকটি। এখন থেকে সে জেলা প্রশাসকের কাছে থাকবে। তাঁর আরেকটি মেয়ে সন্তানের সঙ্গে এ কন্যাশিশুটিও লালিত পালিত হবে।

এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি ভৈরব শহরের দুর্জয় মোড়ে নবজাতকটিকে এক বৃদ্ধা ভিক্ষুকের কাছে রেখে যায় এক নারী। সোমবার আদালতের আদেশে এই অভিভাবকত্ব অর্জন করেন তিনি। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে নবজাতক কন্যাশিশুটিকে ডিসি দম্পতির কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

এদিকে শিশুটিকে দত্তক হিসেবে পেয়ে উচ্ছ্বসিত জেলা প্রশাসক আজ ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, ‘নবজাতকটি পাওয়ার খবর শুনে আমি আমার স্ত্রী সুমনা আনোয়ারের সঙ্গে পরামর্শ করে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করি। দত্তক পেয়ে আমরা খুবই খুশি হয়েছি। মেয়েটিকে আমরা নিজেদের সন্তানের মতোই লালন পালন করব। তাঁর মঙ্গল ও সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকবে সব সময়।’

এ সময় জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার মো. মোহসিন জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এক নারী টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে ভৈরব দুর্জয় মোড়ে এক ভিক্ষুকের কাছে নবজাতককে রেখে যান। কিন্তু সেই নারী আর ফিরে আসেননি। এ অবস্থায় নবজাতক শিশুটিকে নিয়ে বিপাকে পড়েন ওই ভিক্ষুক। পরে পাশের একটি ফার্মেসিতে গিয়ে পুরো ঘটনা খুলে বলেন বৃদ্ধা ভিক্ষুক। পরে ইসলাম ফার্মেসির মালিক আশরাফুল ইসলাম মুকুল শিশুটিকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

এ ব্যাপারে তিনি আরও জানান, শিশুটিকে যেদিন পাওয়া যায় তখন তার বয়স ছিল দুই দিন। নাবজাতকটি এখন সুস্থ রয়েছে। বর্তমানে সে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানার কাছে রয়েছে। বৃহস্পতিবার শিশুটিকে জেলা প্রশাসক ও তাঁর স্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, শিশুটিকে পাওয়ার পর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রিফ্ফাত জাহান ত্রপাকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। পরে এ ব্যাপারে ভৈরব থানায় ফার্মেসির মালিক একটি জিডি করেন। এরপর শিশুটির বিষয়ে করণীয় জানতে সমাজসেবা কার্যালয়ের পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক ২৬ জানুয়ারি শিশুটিকে দত্তক নিতে আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ২৭ জানুয়ারি শিশুটিকে জেলা প্রশাসকের কাছে দত্তক দেওয়ার আদেশ দেন।

সেই আদেশে বলা হয়, ‘শিশুটির সর্বোত্তম কল্যাণ এবং নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনাপূর্বক জেলা প্রশাসক, কিশোরগঞ্জ কর্তৃক ফেলে রেখে চলে যাওয়া কন্যাশিশুটিকে হেফাজতে নিয়ে লালন পালন করার আবেদনটি মঞ্জুরযোগ্য বিবেচনায় অত্র আবেদন মঞ্জুর করা হলো।’এ বিষয়ে কামরুজ্জামান খান জানান, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর হাসপতাল থেকে ভৈরবের ইউএনও শিশুটিকে তাঁর বাসায় নিয়ে যান। ডিসির দত্তক নেওয়া শিশুটি তাঁর পরিচর্যায় রয়েছে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *