ঢাকাবাসীর জন্য সুসংবাদ, আর ঢাকার বাইরে দুঃসংবাদ !!

প্রা’ণঘা’তী করোনা ভা’ইরাস শনাক্ত ও মৃত্যু-দুই ক্ষেত্রে দেশে সর্বোচ্চ হার ঢাকা মহানগরীসহ ঢাকা বিভাগে। তবে দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ-শনাক্ত যত বাড়ছে, ঢাকায় এই হার ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। বাড়ছে বাইরের বিভিন্ন অঞ্চলে। এক মাস আগের তথ্যের সঙ্গে সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। গত ৯ মে ঢাকা বিভাগে শনাক্ত ছিল ৮৪ শতাংশ, গতকাল তা নেমে এসেছে ৬৮.৮ শতাংশে। অন্যদিকে এক মাস আগে চট্টগ্রামে শনাক্ত ছিল ৪ শতাংশের নিচে, যা এখন উঠে এসেছে ১৬ শতাংশে। একইভাবে এক মাসের ব্যবধানে ঢাকার বাইরে অন্য সব বিভাগেও এই হার বেড়েছে। এ পরিস্থিতিকে সংক্রমণের বিস্তারজনিত বিন্যাস ঘটছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ ব্যাপারে রোগতত্ত্ববিদ ও আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘ঢাকায় প্রতিদিনকার সংক্রমণ আগের চেয়ে আনুপাতিক হারে কমছে। কিন্তু আগে ঢাকার বাইরে বিস্তার ছিল খুবই কম। পরে ঢাকা থেকে মানুষ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে সেখানে সংক্রমণের বিস্তার বেড়ে গেছে। এখনো যেহেতু দেশের কোথাও এলাকাকেন্দ্রিক বড় ধরনের সংক্রমণের বিস্ফোরণ ঘটেনি, ফলে মানুষ যদি সতর্ক থাকে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করা যায়, তবে বড় ধরনের সফলতা মিলতে পারে।’

অন্যদিকে গত মাসে দেশজুড়ে মৃত্যুর প্রায় ৯০ শতাংশ যেখানে ঢাকায় ছিল, এখন এই হার প্রতিদিন একটু একটু করে কমে বাড়ছে ঢাকার বাইরে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বুধবার পর্যন্ত করোনায় দেশে যে এক হাজার ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে এর মধ্যে ৬০ শতাংশ ঢাকা মহানগরসহ ঢাকা বিভাগে (৫৯৯), বাকি ৪০ শতাংশ (৪১৩) ঢাকার বাইরে অন্য বিভাগে। এ ক্ষেত্রে শনাক্তের পাশাপাশি মৃত্যু বাড়ছে চট্টগ্রামে (২৬৭)।

গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনের তথ্যানুসারে যে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে ৫৪ শতাংশ বা ২০ জন মারা গেছে ঢাকার। অন্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে সাতজন, রাজশাহী বিভাগে চারজন, সিলেট বিভাগে তিনজন, বরিশাল বিভাগে দুজন এবং রংপুর বিভাগে একজন।

গতকাল বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরো ৩৭ জনের মৃত্যুসহ দেশে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৪৯ জনের। আর এই ২৪ ঘণ্টায় নতুন তিন হাজার ১৮৭ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৮ হাজার ৫২ জনের। এই ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ৮৪৮ জন। মোট সুস্থ হয়েছে ১৬ হাজার ৭৪৭ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ, সাতজন নারী। হাসপাতালে মারা গেছে ২৮ জন, বাড়িতে মারা গেছে ৯ জন। বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে চারজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আটজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ২২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে একজন।

বুলেটিনে আরো জানানো হয়, শেষ ২৪ ঘণ্টার হিসাবে পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫ হাজার ৭৭২টি নমুনা। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে চার লাখ ৫৭ হাজার ৩৩২টি। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১.৪৬ শতাংশ, মৃত্যু ১.৩৪ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় নতুন আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬৭১ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছে আট হাজার ৭৬৪ জন। এই ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে তিন হাজার ১৬১ জনকে। বর্তমানে ৫৮ হাজার ৯৯৯ জন কোয়ারেন্টিনে আছে।

সূত্র- বিডি২৪রিপোর্ট

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *