তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের একমাত্র কুরআনে হাফেজ প্রধানমন্ত্রী !!

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৭১ সালে বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণে এই ভূ-খণ্ডের মুক্তিকামী মানুষের যখন চরম দুঃসময় চলছিল, তখন কারারুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে কাণ্ডারীবিহীন নিপীড়িত মানুষের হাল ধরার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন তিনি।

বাংলাদেশের একমাত্র কুরআনে হাফেজ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। তাজউদ্দীন আহমদের জন্ম ২৩ জুলাই ১৯২৫ সালে। ঢাকা থেকে সড়কপথে ৮২ কিলোমিটার দূরবর্তী কাপাসিয়া থানার দরদরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা মৌলভি মুহাম্মদ ইয়াসিন খান ও মা মেহেরুন্নেসা খানম। তাঁরা ছিলেন চার ভাই ও ছয় বোন।

ধার্মিক মুসলিম পরিবারের সন্তান হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদের শিক্ষাজীবন শুরু হয় তাঁর বাবার কাছে আরবি শিক্ষার মাধ্যমে। একই সময় তিনি ভর্তি হন বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরবর্তী ভুলেশ্বর প্রাইমারি স্কুলে।

স্কুলে তাজউদ্দীন আহমদ বরাবরই প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। ষষ্ঠ শ্রেণীর এমই স্কুলারশিপ পরীক্ষায় তিনি ঢাকা জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন।

১৯৪৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় তিনি প্রথম বিভাগে দ্বাদশ স্থানের অধিকারী হন। ১৯৪৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় তিনি প্রথম বিভাগে চতুর্থ স্থান লাভ করেন।

তাজউদ্দীন আহমদ পবিত্র কোরআনে হাফেজ ছিলেন, যা তিনি নিয়মিত লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার সান্নিধ্যে আয়ত্ত করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে বি এল ডিগ্রি লাভ করে বর্ধমান আদালতে আইন ব্যবসা শুরু করেন।১৯৫৯ সালে এপ্রিলের ২৬ তারিখে তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে সৈয়দা জোহরা খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের তিন মেয়ে ও এক ছেলে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একই দিন সকালে তাজউদ্দীন আহমদকে গৃহবন্দি করা হয় এবং পরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

বন্দি অবস্থায় ১৯৭৫ সালের ৩ সভেম্বর কারাগারে হত্যা করা হয় তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে।বাঙালি জাতি তথা বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে চির অক্ষয় হয়ে লেখা রয়েছে তাঁর অবদান।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *