দলে দলে সৌদি আরব থেকে ফিরে আসছে প্রবাসীরা !!
Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/bn.ekusherbangladesh.com.bd/public_html/wp-content/plugins/one-user-avatar/includes/class-wp-user-avatar-functions.php on line 798
Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/bn.ekusherbangladesh.com.bd/public_html/wp-content/plugins/one-user-avatar/includes/class-wp-user-avatar-functions.php on line 798

কফিল তাঁদের ইকামা করে দেননি। পুলিশে ধরা পড়ার পর যোগাযোগ করা হলেও কোনো দায়িত্ব নেননি কফিল। ২০১৯ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরে এসেছেন ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী। তাঁদের মধ্যে শুধু সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন ২৫ হাজার ৭৮৯ জন
অনেকে কাজ না পেয়ে অবৈধ হয়ে পড়েন। সৌদি পুলিশের হাতে আটক হয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন অবৈধ শ্রমিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে সৌদি পুলিশ। বিভিন্ন দেশের ১০ লাখের বেশি কর্মীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে
বৈধভাবে আসার পরও অনেকে কাজ পরিবর্তন করার দায়ে অবৈধ হয়ে পড়েন নকল চাকরির ভিসায় কোনো শ্রমিককে সৌদি না পাঠাতে দেশের প্রতিটি এজেন্সিকে সতর্ক করা হয়েছে এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় এবং প্রত্যেকে গিয়ে যেন কাজ পান, সেটা নিশ্চিত করতে রিক্রুটিং এজেন্সি, দূতাবাস ও সরকারকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবে চলমান অভিযানে নিয়মিতভাবে ফেরত আসছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। কাজ নিয়ে দেশটিতে যাওয়ার মাত্র তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেও ফিরে আসছেন কেউ কেউ। সর্বশেষ শনিবার মধ্যরাতে ফিরেছেন ১৪৫ জন। সব মিলিয়ে গত দেড় মাসে সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মীকে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি আরব।
মাত্র তিন মাস আগে তিন লাখ টাকা খরচ করে গাড়ি চালানোর কাজে গিয়ে গত শনিবার রাতে ফিরে এসেছেন মো. শহিদুল ইসলাম। আট মাসের মাথায় নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার একই গ্রামের দুই যুবক বিজয় মিয়া ও নাজির উদ্দিন দেশে ফিরেছেন।
তাঁরা জানান, কফিল (নিয়োগকর্তা) তাঁদের ইকামা (কাজের বৈধ অনুমতিপত্র) করে দেননি। পুলিশে ধরা পড়ার পর যোগাযোগ করা হলেও কোনো দায়িত্ব নেননি কফিল। তাঁদের মতোই সৌদি আরবে যাওয়ার ৯ মাসের মধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলামিন, নোয়াখালীর শাহজাহান, চাঁদপুরের আমিনুল, নারায়ণগঞ্জের হোসেন আলী, মৌলভীবাজারের পারভেজ মিয়া, সাতক্ষীরার ওবায়দুল্লাহ সহ ১৪৫ জন। গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তাঁরা ফিরে আসেন বলে জানিয়েছে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি।
প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের তথ্য বলছে, গত জানুয়ারিতে ৩ হাজার ৬৩৫ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৯৫৯ জন সৌদি আরব থেকে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত তিন’শ রয়েছেন নারী। ২০১৯ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরে এসেছেন ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী। তাঁদের মধ্যে শুধু সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন ২৫ হাজার ৭৮৯ জন। প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ফিরে আসা কর্মীদের প্রাথমিকভাবে বিমানবন্দরে জরুরি সহায়তা দেয় ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি।
তবে জনশক্তি, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক মো. শামছুল আলম গতকাল প্রবাসমেইল-কে বলেন, পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। নারী কর্মীদের নির্যাতিত হওয়ার অভিযোগ অনেক কমে এসেছে। তিনি বলেন, ‘দালালের প্ররোচনায় না পড়ে বৈধভাবে কাগজপত্র দেখে বিদেশে যাওয়ায় উৎসাহী করা হচ্ছে। নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’অনেকে কাজ না পেয়ে অবৈধ হয়ে পড়েন। সৌদি পুলিশের হাতে আটক হয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।
সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, অবৈধ শ্রমিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে সৌদি পুলিশ। বিভিন্ন দেশের ১০ লাখের বেশি কর্মীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জানান, কাজ নিয়ে সৌদি আসা কর্মীদের কফিল বা কাজ বদলের সুযোগ নেই। যে কাজ নিয়ে তাঁরা আসেন, তার বাইরে কিছু করার আইনগত অধিকার নেই তাঁদের। তাই বৈধভাবে আসার পরও অনেকে কাজ পরিবর্তন করার দায়ে অবৈধ হয়ে পড়েন।
বেসরকারি খাতের জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী প্রবাসমেইল-কে বলেন, নিয়োগদাতার নিয়োগের সামর্থ্যের বিষয়টি যাচাই করে ভিসা দিলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। নকল চাকরির ভিসায় কোনো শ্রমিককে সৌদি না পাঠাতে দেশের প্রতিটি এজেন্সিকে সতর্ক করা হয়েছে।
জানা গেছে, নিয়োগপত্র দেখিয়ে তিন মাসের ভিসা নিয়ে সৌদি যান কর্মীরা। ওই সময়ের মধ্যে ইকামা নিতে হয় তাঁদের। যাঁরা ইকামা নিতে ব্যর্থ হন, তাঁরা অবৈধ হয়ে পড়েন। ৬ মাস বা এক বছরের জন্য ইকামা নিলেও পরে নবায়ন করতে যাঁরা ব্যর্থ হন, তাঁরাও অবৈধ হয়ে পড়েন।
আবার কোনো কোনো সৌদি নাগরিকের যোগসাজশে নকল নিয়োগপত্র বানিয়ে নিয়ে যান দালালেরা। পরে দেখা যায়, নিয়োগদাতা সৌদি নাগরিকের নিয়োগ দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। তাই কাজের ভিসা নিয়ে গিয়েও কোনো কাজের সুযোগ পান না শ্রমিকেরা। বাধ্য হয়ে অন্য কোনো মালিক খুঁজে বের করতে হয়, যা অবৈধ। এসব ক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিক দুজনকেই দেশটিতে দোষী বিবেচনা করা হয়। মালিকের আর্থিক জরিমানা এবং শ্রমিকের জেলা ও জরিমানার বিধান আছে সৌদি আইনে।
অনেক সময় শ্রমিকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেল ও জরিমানা মওকুফ করা হলেও তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ তালিকায় তাঁর নাম উঠে যায়। ফলে আর কখনো সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ থাকে না ওই কর্মীর।
এ বিষয়ে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান প্রবাসমেইল-কে বলেন, এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় এবং প্রত্যেকে গিয়ে যেন কাজ পান, সেটা নিশ্চিত করতে রিক্রুটিং এজেন্সি, দূতাবাস ও সরকারকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।