‘দারিদ্র্যের হার কমাতে হলে, ধনীরা গরিবদের বিয়ে করুন’ !!

দেশে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনতে গরিবদের বিয়ে করার জন্য ধনীদের প্রস্তাব দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার এক মন্ত্রী। বুধবার স্থানীয় দৈনিক জাকার্তা পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।এতে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার সমন্বিত মানব উন্নয়ন ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী মুহাদজির এফেন্ডি বলেছেন, কী হবে (বিয়ের জন্য) গরিব মানুষরা যদি অন্য গরিবদের খোঁজেন? এটা ইন্দোনেশিয়ার জন্য এক ধরনের সমস্যা।

মন্ত্রী বলেন, ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় ৫০ লাখ গরিব পরিবার আছে; যা দেশের মোট ৫ কোটি ৭১ লাখ পরিবারের ৯ দশমিক ৪ শতাংশের সমান। তিনি বলেন, এর সঙ্গে যদি নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো যোগ করা হয়; তাহলে সেই সংখ্যা ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ অর্থাৎ দেড় কোটিতে দাঁড়াবে।

জাকার্তা পোস্ট বলছে, মন্ত্রী এফেন্ডি দেশটির ধর্মমন্ত্রী ফখরুল রাজিকে একটি ফতোয়া জারির পরামর্শ দিয়েছেন। এই ফতোয়া জারি হলে ধনী এবং গরিবরা বিয়ে করার জন্য পরস্পরকে খুঁজে নেবেন।

এছাড়া যেসব তরুণ-তরুণী বিয়ে করতে ইচ্ছুক, কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পারছেন না তাদের জন্য প্রি-ম্যারিটাল সার্টিফিকেশন নামে একটি কর্মসূচি চালু করারও প্রস্তাব দেন। এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী তরুণ-তরুণীদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দেয়া হবে; যাতে তারা কাজ খুঁজে নিতে পারেন।

প্রি-ম্যারিটাল সার্টিফিকেশন কর্মসূচি ইন্দোনেশিয়ায় নতুন গরিব পরিবারের সংখ্যা কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে বলে মন্তব্য করেন এই মন্ত্রী। বিশ্বব্যাংকের বরাত দিয়ে জাকার্তা পোস্ট বলছে, ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ৪৫ শতাংশ মানুষ (সাড়ে ১১ কোটি) এখনও আর্থিক নিরাপত্তা এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনধারা অর্জন করতে পারেনি।

গত ১৫ বছরে দেশটিতে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে ইন্দোনেশিয়া। বিশ্বব্যাংক বলছে, ইন্দোনেশিয়ায় গত ১৫ বছরে দারিদ্র্যের হার ১০ শতাংশ কমেছে। এই সময়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০ শতাংশ হয়েছে।

মন্ত্রী এফেন্ডির ওই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সর্বোচ্চ ধর্মীয় নীতিনির্ধারণী সংস্থা ইন্দোনেশিয়ান উলামা কাউন্সিল (এমইউআই)। এমইউআইয়ের মহাসচিব আনোয়ার আব্বাস বলেছেন, এর মাধ্যমে একে অপরকে সহায়তা করার মনোভাব প্রকাশ পাবে।

তিনি বলেন, দেশে অনেক গরিব পরিবার আছে এবং অনেক সময় বিধবা নারীরা স্বামীদের চেয়ে বেশি সংগ্রাম করেন। জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি সন্তানদেরও লালন-পালন করতে হয় তাদের। এই সময়ে যদি তিনি একজন ধনী মানুষকে পেতেন, তাহলে তাকে পছন্দ করতেন। এটা হতো মহৎ একটি কাজ।

আনোয়ার আব্বাস বলেন, একটি গরিব পরিবার এভাবে ধনী হবে এবং দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা কমে যাবে। মন্ত্রীর প্রস্তাবে দুটি ভালো দিক আছে।প্রথমত, দারিদ্র্র্য দূর হবে। দ্বিতীয়ত, সম্পদ শুধু ধনীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *