Internation News

দিল্লিতে সাংবাদিকের প্যান্ট খুলে ধর্ম যাচাই !!

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে দেশটির বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের সময় কর্তব্যরত সাংবাদিকদের প্যান্ট খুলে, তিনি সংবাদ সংগ্রহের ‘উপযুক্ত’ কিনা, সেই পরিচয় নিশ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। দেশটির দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস এ নিয়ে একটি অনলাইন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তাতে বলা হচ্ছে, সিএএ-বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দিল্লিতে সহিংসতার শিকার হলেন সংবাদকর্মীরা। আজ মঙ্গলবার গুলিবিদ্ধ হলেন এক সাংবাদিক। বেধড়ক মারধর করা হয়েছে আরও দুই সংবাদকর্মীকে। সোমবার বিক্ষোভে উত্তপ্ত এলাকায় খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্তার পর কোনো রকমে রেহাই পেলেন এক বাঙালি সাংবাদিক।

এদিন উত্তর-পূর্ব দিল্লির মৌজপুরে হামলাকারীদের গুলিতে আহত সাংবাদিক আকাশ এখন হাসপাতালে। এছাড়া জ্বলন্ত মসজিদের ছবি তুলতে গেলে প্রচণ্ড মারধর করা হয় এনডিটিভির দুই সাংবাদিক অরবিন্দ গুণশেখর ও সৌরভ শুক্লাকে। গতকাল সেখানেই হামলার শিকার হন টাইমস অব ইন্ডিয়ার চিত্র সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে চিত্র সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় তার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার যে বিবরণ দিয়েছেন, তা পড়লে শিউরে উঠতে হয়। তিনি জানিয়েছেন, উত্তেজনাপূর্ণ জাফরাবাদ অঞ্চলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলাসহ ভয়াবহ এক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি ও তার সহকর্মী সাংবাদিক।

তিনি লিখেছেন, ‘ঝামেলা হয়েছে শুনে বেরিয়েছিলাম। টাইমস অব ইন্ডিয়ার চিত্রগ্রাহক আমি। কিন্তু আজ উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে কিছুক্ষণ ঘুরে এবং প্রাণ হাতে করে অফিসে ফিরে বুঝলাম—দিগভ্রষ্ট যুবসমাজ যখন ধর্মের অছিলায় আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয়, তখন পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর হয় ‘

অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় নামের ওই সাংবাদিক লিছেছেন, ‘অফিসের গাড়িতে মৌজপুর মেট্রো স্টেশনের কাছে দুপুর সোয়া ১২টা নাগাদ। তখনই প্রথমবার বিস্মিত হই। কারণ সেখানে হিন্দু সেনার একজন সদস্য এসে আমাকে মাথায় তিলক লাগাতে বলে। তিলক কেন? বললো, আপনিও তো ভাই হিন্দু। সমস্যা কোথায়? এতে ওখানে কাজ করতে সুবিধা হবে।’

এর ১৫ মিনিট পরই সেখানে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ি শুরু হয় এবং ‘মোাদি’ ‘মোদি’ স্লোগানের মাঝে কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যায়। জানা যায়, স্থানীয় একটি বাড়িতে আগুন লেগেছে। সে দিকে এগোতে গেলে একটি শিব মন্দিরের কাছে অনিন্দ্যকে একদল মানুষ বাধা দেন। ছবি তুলতে যাচ্ছে জানতে পেরে তারা তাকে বলেন, ‘ভাই, আপনিও তো হিন্দু। তাহলে ওখানে কেন যাচ্ছেন? হিন্দুরা আজ জেগে উঠেছে।’

বাধা পেয়ে অন্যপথে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছবি তুলতে গেলে তাকে ঘিরে ফেলে হাতে লাঠি ও লোহার রডধারী একদল যুবক মাঝবয়সী মানুষ। তারা ওই সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেন তার সহকর্মী ও সাংবাদিক সাক্ষী চাঁদ। রুখে দাঁড়াতেই দেয় সশস্ত্র দলটি সেখান থেকে চলে যায়।

তবে একটু পরই অনিন্দ্য বুঝতে পারেন, তার পিছু নেওয়া হয়েছে। অনুসরণকারীদের মধ্যে এক তরুণ এগিয়ে এসে তাকে সতর্ক করে, ‘ভাই, তুই একটু বেশি চালাকি করছিস। তুই হিন্দু, না মুসলিম?’ তারা ওই সাংবাদিকের প্যান্ট খুলে ধর্মীয় ‘পরিচয়’ খোঁজার চেষ্টা করলে হাতজোড় করে অনেক অনুনয়ের পর কিছু হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

অফিসের গাড়ি না পেয়ে অটোরিকশা নিয়ে ফেরার চেষ্টা করেন অনিন্দ্য। কিন্তু অটোচালক মুসলিম হওয়ায় তাদের মাঝপথে থামিয়ে ঘেরাও করে চারজন সশস্ত্র যুবক। কলার ধরে দুজনকে অটো থেকে নামিয়ে মারধরের চেষ্টা করে। সাংবাদিক পরিচয় এবং অটোচালক নির্দোষ, এমন কথা বলে অনেক অনুনয়ের পরে তারা ছাড়া পান।

অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘মুহূর্তগুলো আমার পার হলো ভয়ানক আতঙ্কে। ওই অটোওয়ালাই যখন আমাকে অফিসে দিয়ে গেল, তখনও সে ভয়ে কাঁপছে। চলে যাওয়ার আগে শুধু বললো, ‘‘গোটা জীবনে কেউ আমাকে ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করেনি কখনো।’’

এদিকে দুদিনের ভারত সফরে এখন দিল্লিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দিল্লিতে এহেন অবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদিন সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। সই হয়েছে ৩০০ কোটির প্রতিরক্ষা চুক্তি। আর উত্তরদিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ অন্তত সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে।

সূত্রঃ জাগো নিউজ

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button