দেশে করোনায় আ’ক্রান্ত ১৯১ পোশাক শ্রমিক !!

দেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের করোনা আ’ক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ পর্যন্ত প্রা’ণঘাতী এ ভা’ইরাসে ৯০টি কারখানার ১৯১ পোশাক শ্রমিক সংক্রমিত হয়েছেন।শুক্রবার (২৯ মে) শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, পোশাক কারখানা মালিকদের বড় সংগঠন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) উদ্যোগে পোশাক শ্রমিকদের করোনা আক্রন্তের তথ্য সংগ্রহ ও চিকিৎসা দিতে কাজ করছে কয়েকটি টিম। তাদের সংগ্রহ করা তথ্যে গত ২৮ এপ্রিল দেশের পোশাক কারখানায় প্রথম একজনের করোনা উপসর্গ পাওয়া যায়।সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত পোশাক কারখানায় এখন পর্যন্ত করোনায় আ’ক্রান্ত হয়েছে ১০৩ শ্রমিক। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ জন। বাকি ৮৪ জন এখনও করোনা পজেটিভ রয়েছে।

বিজিএমইএ জানিয়েছে, দেশে করোনা সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো পোশাক শ্রমিক করোনায় আ’ক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা দিতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আ’ক্রান্ত শ্রমিকের তথ্য পেতে চালু করা হয়েছে হটলাইন। পাশাপাশি চারটি জোন ভাগ করে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া যে শ্রমিক করোনায় আ’ক্রান্ত হচ্ছেন তাকে এবং ওই শ্রমিকদের সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও ছুটিতে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে। যারা বেশি অসুস্থ তাদের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। যার খরচ বহন করছেন কারখানার মালিকরা।

এদিকে পোশাক খাতের শ্রমিকদের করোনার পর্যপ্ত টেস্টে করা হচ্ছে না অভিযোগ করে গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি লীমা ফেরদৌস জাগো নিউজকে বলেন, প্রাণঘাতী করোনা থেকে পোশাক শ্রমিকদের রক্ষায় পর্যাপ্ত টেস্টের ব্যবস্থা করা জরুরি। কারণ শ্রমিকরা সহজে টেস্ট করাতে পারছে না। আর টেস্ট না করাতে পারলে আ’ক্রান্ত হয়েছে কি না বুঝবে কিভাবে।

তিনি বলেন, পর্যাপ্ত টেস্টের ব্যবস্থা নেই। আশুলিয়ায় অনেক পোশাক কারখানা রয়েছে।কিন্তু সেখানে করোনা টেস্টের কোনো ব্যবস্থা নেই। কেউ আ’ক্রান্ত হলে তাকে সাভার অথবা ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। দূরে গিয়ে টেস্ট করা ও নানা ভোগান্তির ভয়ে শ্রমিকরা করোনা টেস্ট করছে না। তাই শ্রমিকদের সহজে টেস্টের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সরকার ও কারখানার মালিক একসঙ্গে সমন্বয় করে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

শ্রমিক নেত্রী লীমা ফেরদৌস আরও বলেন, আমরা শুরু থেকেই বিষয়গুলো বলে আসছি। শ্রমিকদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত টেস্টের ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এ খাতে শ্রমিক সঙ্কট ভয়াবহ রূপ নিবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।এদিকে শিল্প পুলিশের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৯০টি কারখানার ১৯১ পোশাক শ্রমিক করোনায় আ’ক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে বিজিএমইএ সদস্য ৪৬টি কারখানা। যেখানে আ’ক্রান্ত হয়েছেন ১০৫ শ্রমিক। বিকেএমইএ সদস্য ২১টি কারখানার আ’ক্রান্ত ৫৭, ইপিজেডগুলোতে অবস্থিত ১০ কারখানার ১৪ ও অন্যান্য ১২ পোশাক কারখানার ১৩ শ্রমিক করোনায় আ’ক্রান্ত হয়েছেন।

এ ছাড়া বিটিএমএ সদস্য একটি টেক্সটাইল মিলসে দুজন শ্রমিক আ’ক্রান্ত হয়েছেন।শিল্প পুলিশের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সারাদেশের পোশাক কারখানার মধ্যে ঢাকার আশুলিয়ায় সবচেয়ে বেশি শ্রমিক আ’ক্রান্ত হয়েছেন। আশুলিয়ার ২৬টি কারখানার ৬১ শ্রমিক আ’ক্রান্ত হয়েছেন। পরের অবস্থানে থাকা নারায়ণগঞ্জে ২৩ কারখানার ৬০ শ্রমিক আ’ক্রান্ত হয়েছেন। চট্টগ্রামে ১৪টি পোশাক কারখানার ১৭ শ্রমিক, ময়মনসিংহে তিনটি কারখানার চারজন শ্রমিক এবং খুলনায় একটি কারখানার একজন শ্রমিক করোনায় আ’ক্রান্ত হয়েছেন।

সূত্র- জাগো নিউজ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *