দেশের খবর

দেশে ফিরেও যে কারনে ভালো নেই সেই সুমি !!

সৌদিতে নির্যাতনের শিকারের কথা একটি ভিডিওতে শেয়ার করে আলোচনায় আসা সুমি আক্তার ভালো নেই। দেশে ফিরে নতুন সংকটে পড়েছেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি স্বামী নুরুল ইসলামের হুমকি-ধমকিতে তার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তাই এ সংকট নিরসনে সরকারের কাছে পুনর্বাসন চায় সুমির পরিবার। এদিকে সৌদি আরবে তার এই করুণ পরিণতির জন্য স্বামীকে দায়ী করে সুমি তার স্বামীর সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সুমির স্বামীসহ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান সুমি।

গত ১৫ নভেম্বর সৌদিতে নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী সুমি আক্তারকে দেশে ফিরিয়ে এনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সুমির বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি ফেরার পর থেকেই সুমি ঘরের মধ্যেই সময় কাটান। কারও সঙ্গে তেমন কথাও বলছেন না। এ ছাড়া শারীরিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চোখের কর্ণিয়া সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

এর মধ্যে নতুন করে সুমির স্বামী নুরুল ইসলাম বিভিন্নভাবে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন সুমি। সুমি জানান, টাকার অভাবে জেএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি তিনি। প্রায় দুই বছর আগে ঢাকার গাজীপুরে মামার বাড়িতে থেকে সেখানকার এক সোয়েটার কারখানায় কাজ শুরু করেন। মামি শরিফা খাতুন আশুলিয়ার চারাবাগ এলাকার নুরুল ইসলামের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়। একদিন তার মামার বাড়ি থেকে জুতা সেলাই করতে মুচির কাছে গেলে সেখান থেকে সুমিকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় নুরুল ইসলাম। ৭-৮ দিন আশুলিয়ার পারভেজ নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে আটকে রেখে বিয়ে করতে বাধ্য করে সুমিকে। অপ্রাপ্তবয়স্ক সুমির জাল জন্মসনদ তৈরি করে বিয়ে করেন নুরুল ইসলাম। নুরুল ইসলাম মাদক চক্রসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মে জড়িত ছিল। তার পরও কষ্ট করে তার সংসার শুরু করেন সুমি। কিন্তু তার স্বামী তাকে বিদেশে পাঠানোর চক্রান্ত শুরু করে দেয়। নুরুল ইসলাম তার পরিচিত দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠানোর সব বন্দোবস্ত করেন।

সুমি বলেন, ‘এখন আমাকে সেই দুর্বিষহ নির্যাতনের দিনগুলোর কথা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এখনও স্বাভাবিক হতে পারছি না। অসুস্থ হয়ে পড়েছি। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমি আর নুরুল ইসলামের সঙ্গে সংসার করতে চাই না। তার জন্যই আজ আমার এই পরিণতি। ২০০২ সালে আমার জন্ম হলেও সে আমার বয়স ২৫ দেখিয়ে সৌদিতে পাঠায়। সৌদিতে গিয়ে আমি বুঝতে পারি ও আমাকে দালালদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। আমি এখন তার সংসার করতে রাজি না হওয়ায় স্বামী আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমার নামে মামলা করবে বলে ভয় দেখাচ্ছে। আমরা নাকি তার কাছে ১২ লাখ টাকা নিয়েছি। অথচ উল্টো সে আমাকে ফিরিয়ে আনার কথা বলে আমার বাবার কাছে অনেক টাকা নিয়েছে। আমার বাবা গরু বিক্রি করে তাকে টাকা দিলে তার পর নুরুল ইসলাম আমার ভিডিওটি প্রকাশ করার ব্যবস্থা করে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সরকার আমাকে দেশে ফিরিয়ে আনায় আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি যেন নতুন করে আমার ভবিষ্যৎ গড়তে পারি, সেই সহযোগিতা সরকারের কাছে চাইছি।’

সুমির বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, নুরুল ইসলামের অপকর্মের কথা এখন সবাই জেনে গেছে, তাই ও আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমার মেয়েকে ফিরিয়ে আনার কথা বলে নুরুল ইসলাম আমার কাছে কয়েক দফায় ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমার মেয়েকে সে জোর করে আটকে রেখে বিয়ে করেছে। আমরা বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’ এ ব্যাপারে বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, ‘যেকোনো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সুমির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে তাকে কোনোভাবে সাহায্য করা যায় কিনা তা আমরা ভাবছি। সুমি জানিয়েছে, তার স্বামীর কাছে সে ফিরে যেতে চায় না। তার পরও কেউ যদি তার সঙ্গে জবরদস্তি করে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ উল্লেখ্য, সুমির বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের বৈরাতি সেনপাড়া এলাকায়।

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button