পঙ্গপালের হানায় দিশেহারা হয়ে কাঁপছে ভারতের ৫ রাজ্য !!
করোনাভা’ইরাস ম’হামা’রির মাঝে ভারতে পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলের অন্তত পাঁচটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে পঙ্গপালের ঝাঁক। রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের একাধিক গ্রামে ও শহরে ঢুকে পড়েছে এসব পঙ্গপালের দল। লকডাউনের মাঝে ফসলের জমিতে পঙ্গপালের এই হানায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সেখানকার কৃষকরা।
সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে ভারতে পঙ্গপাল দেখা গেলেও চলতি বছর তার আগেই হানা দিয়েছে। দেশটির পতঙ্গবিদরা বলছেন, পঙ্গপালের এক একটি দল আকারে প্যারিস শহরের মতো বড় হতে পারে। তবে সবচেয়ে বড় আশঙ্কা, ওই আকারের পঙ্গপালের একটি দলের অর্ধেক পুরো ফ্রান্সের বাসিন্দাদের মতো খাবার সাবাড় করার ক্ষমতা রয়েছে। পূর্ব মহারাষ্ট্রের চার থেকে পাঁচটি গ্রামে হানা দিয়েছে পঙ্গপাল। ফসল বাঁচাতে ইতোমধ্যে জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করতে শুরু করেছেন কৃষকরা। উত্তরপ্রদেশের মথুরাতেও হানা দিয়েছে পঙ্গপাল।
পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। পাকিস্তান পেরিয়ে এপ্রিলের প্রথম দিকে রাজস্থানে ঢুকেছিল পঙ্গপালের দল। সেসময় জয়পুর শহরেও দেখা যায় পঙ্গপাল। এর পর তা ছড়িয়ে পড়েছে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পঙ্গপাল যে হানা দিয়েছে তা নিয়ে গত সপ্তাহে সতর্কবার্তা জারি করেছিল দেশটির কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়। দেশটির রাজধানী দিল্লিতেও এই পঙ্গপাল হানা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পতঙ্গবিদরা।এর আগে, গত বছর গুজরাটি পঙ্গপালের ঝাঁক হানা দিয়ে ২৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল ধ্বংস করেছিল। কিন্তু ফসল ধ্বংসের সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে এবার। পঙ্গপাল সাধারণত গড়ে ৯০ দিন জীবিত থাকে। মরু পঙ্গপালের ঝাঁক দিনে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পূর্ব আফ্রিকা, দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া এবং লোহিত সাগর সংলগ্ন এলাকায় অনুকূল আবহাওয়ার জেরেই পঙ্গপালের বিপুল প্রজনন ঘটেছে। আর সেই ধাক্কাই এখন সামলাতে হচ্ছে ভারতের অন্তত পাঁচ রাজ্যকে।দেশটির অপর একটি সংবাদমাধ্যম বলছে, ১৯৯৩ সালেও পঙ্গপাল হানা দিয়েছিল ভারতে। তবে ভয়ঙ্কর রূপ দেখা যায় ১৯৬২ সালে। ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৭৮ ও ১৯৯৩ সালের পর এভাবে পঙ্গপালের হানা দেখা যায়নি।
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ভারতে গত ২৭ বছরে পঙ্গপালের হানার এমন দৃশ্য দেখা যায়নি।জাতিসংঘের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ‘ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) বলেছে, ভারতে পঙ্গপাল পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। আগামী মাসে ভারতে ঢুকবে আরও কয়েক ঝাঁক পঙ্গপাল। পূর্ব আফ্রিকা থেকে সেগুলো ভারত ও পাকিস্তানের দিকে ধেয়ে আসছে।