পুরনো বন্ধুর সঙ্গে বৃদ্ধাশ্রমে দেখা, অতঃপর ধুমধাম করে বিয়ে !!

প্রেমে পড়ার আসলে কোনো বয়স নেই। আরেকবার সেটাই দেখিয়ে দিলেন বৃদ্ধাশ্রমে থাকা দুই মানুষ। তাদের একজনের বয়স ৬৭ বছর, অন্যজনের ৬৬। মাস দুয়েক আগে তারা সিদ্ধান্ত নেন, বাকি জীবন পরস্পরের হাত ধরে কাটিয়ে দেবেন।

সে অনুসারে গতকাল শনিবার ধুমধাম করে বিয়েও করে নেন তারা। অবশ্য পরিচয়টা তাদের ৩০ বছর আগের। বিয়ের সিদ্ধান্ত মাস দুয়েক আগেই নিয়েছেন। তাদের চার হাত এক করতে উপস্থিত ছিলেন ভারতের কেরালা রাজ্যের এক মন্ত্রীও।

কেরালার ত্রিশূরে রামবর্মপুরমের সরকারি বৃদ্ধাশ্রমে এই ইতিহাস তৈরি হয়েছে। রাজ্যের সরকারি কোনো বৃদ্ধাশ্রমে বিয়ের ঘটনা এই প্রথম। শনিবার পরিচিতদের উপস্থিতিতে বিয়ে করলেন কোচানিয়ান মেনন ও পিভি লক্ষ্মী আম্মাল। বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেরালার কৃষিমন্ত্রী ভিএস সুনীল কুমার।

কোচানিয়ান ও আম্মাল পরস্পরকে প্রায় ৩০ বছর ধরে চেনেন। কোচানিয়ান ও আম্মাসের স্বামী পূর্ব পরিচিত ছিলেন। ২১ বছর আগে আম্মালের স্বামী মারা যান। মৃত্যুশয্যায় কোচানিয়ানকে ডেকে বলেন, তার স্ত্রীর খেয়াল রাখতে। তার কয়েকদিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় আম্মালের স্বামীর।

স্বামীর মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন একাই থেকেছেন আম্মাল। তখন নিয়মিত আম্মালের খোঁজ-খবর নিতেন, প্রয়োজন অনুসারে তাকে সাহায্য করতেন কোচানিয়ান। এরপর বছর কয়েক আগে নিজের বাড়ি বিক্রি করে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান আম্মাল।

আত্মীয়র বাড়িতে যাওয়ার পরেও প্রথমে যোগাযোগ ছিল দু’জনের মধ্যে। বিপদে আপদে আম্মালের পাশে থেকেছেন কোচানিয়ান। কিন্তু তারপর আস্তে আস্তে যোগাযোগ কমে যায়।

বছর দুয়েক আগে রামবর্মপুরমের বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসেন, সেখানে জীবনের বাকিটা কাটিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেন আম্মাল। সেখানে আবারো যোগাযোগ গড়ে ওঠে কোচানিয়ানের সঙ্গে। সেই যোগাযোগ শেষ পর্যন্ত একসঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকারে বদলে যায় মাস দুয়েক আগে।

কোচানিয়ান বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসার পর দুই পুরনো বন্ধু এবার সিদ্ধান্ত নেন তারা বাকি জীবনটা স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই কাটিয়ে দেবেন। তাদের এই সিদ্ধান্তকে শুভেচ্ছা জানান বৃদ্ধাশ্রমের বাকি সদস্যরাও।প্রথমে ঠিক হয় ৩০ ডিসেম্বর তাদের বিয়ে হবে। কিন্তু কোনো কারণে সেটি এগিয়ে আনা হয়। শনিবার তারা বিয়ে করেন। এমনকি আগের দিন শুক্রবার মেহেদির অনুষ্ঠানও হয় ধুমধাম করে। তাতে বৃদ্ধাশ্রমের সবাই অংশ নেন।

বিয়ের দিন অনুষ্ঠানে শুধু উপস্থিত থাকাই নয়, কেরালার কৃষিমন্ত্রী সুনীল, আম্মালের হাত কোচানিয়ানের হাতে তুলে দেন। সুনীল ফেসবুকে লেখেন, এটি তার জীবনের অন্যতম সেরা স্মরণীয় দিন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *