পেঁয়াজ কিনতে লাইনে ইট,ব্যাগ,খবরের কাগজ,মিষ্টির প্যাকেট !!

আজ ৩০ নভেম্বর শনিবার সকাল ৮টা। রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদের সামনে সারি করে রাখা হয়েছে ইট, ব্যাগ, মিষ্টির প্যাকেট, পানির বোতল ও খবরের কাগজ। পাশাপাশি দুটি লাইনে এ সব রাখা হয়েছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পেঁয়াজের জন্য।

জানা যায়, এই স্থানে প্রতিদিন টিসিবির ডিলার ট্রাকে করে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। প্রতিদিন সকাল ১০টায় ট্রাক আসার আগেই পেঁয়াজ কিনতে আসা মানুষ দাঁড়িয়ে যান লাইনে।

তবে আজ শনিবার পেঁয়াজের ক্রেতারা নিজে লাইনে না দাঁড়িয়ে থেকে ইট, ব্যাগ, খবরের কাগজকে লাইনে রেখে দেন। এমন দীর্ঘ দুটি লাইন দেখে হাসাহাসি করেছেন অনেকে। কিন্তু যারা এই লাইন করেছিলেন তারা বলছেন, নিজেদের সুবিধার জন্যই এই ব্যবস্থা।

এদিকে রাজশাহীতে পেঁয়াজের বাজার এখনও অস্থিতিশীল। গত ২৪ নভেম্বর থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি চলছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সেদিন থেকেই নগরীর পাঁচটি পয়েন্ট থেকে পেঁয়াজ কিনছেন ক্রেতারা। মানুষের এত ভিড় নিয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য থাকে পুলিশের পাহারাও।

আজ সকালে সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে বড় মসজিদের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকেই ইট, খবরের কাগজ, মিষ্টির প্যাকেট ও পানির বোতল লাইন করে রেখে দেয়া হয়েছে। যারা রেখেছেন তাদের কেউ লাইনের আশপাশেই ঘোরাফেরা করছেন, কেউবা গিয়েছেন প্রয়োজনীয় কাজ সারতে।

এসব রেখে আবার কেউ গিয়েছেন সবজির বাজারে। তাদের আশা ছিল, প্রয়োজনীয় কাজ সারতে সারতেই পেঁয়াজের ট্রাক চলে আসবে। কিন্তু শেষে তাদের নিরাশ হয়েই ফিরতে হয়। এ দিন নগরীর কোথাও পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়নি।

এদিকে নগরীর হড়গ্রাম বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনতে এসেছিলেন আবদুর রহিম। তিনি একটি খবরের কাগজ লাইনে রেখে গিয়েছিলেন বাজার করতে। সকাল ৯টার দিকে এসে তিনি দেখছিলেন তার কাগজ ঠিক আছে কি না।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি এর আগে দুইবার এসে পেঁয়াজ নিয়ে গিয়েছি। আসলে অনেক বেশি ভিড় হয়। পায়ে ব্যথা ধরে যায়। তাই এই ব্যবস্থা করেছি। রহিমের মতো একই কথা বলেন আবদুস সালাম। তিনি নগরীর বড়কুঠি এলাকা থেকে এসেছিলেন।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি লাইনে ইট রেখেছি। লাইনে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। তাই এই ব্যবস্থা করেছি। লাইনে মিষ্টির প্যাকেট রেখে ঘোরাফেরা করছিলেন শফিকুল ইসলাম।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাটা কষ্টকর। তাই সবাই এই ব্যবস্থা করেছেন। তাদের দেখাদেখি তিনিও করেন। তবে সকাল ১০টার পর তারা জানতে পারেন পেঁয়াজের ট্রাক আসবে না। তখন তাদের হতাশ হয়ে ফিরতে হয়।’

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *