প্রধানমন্ত্রীর নামে জমি, ২১ বছর ধরে খাজনা দিচ্ছেন তিনি !!

কবির আহমদ নামে এক বৃদ্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নিজের ৭ শতক জমি লিখে দিয়ে ২১ বছর ধরে ওই জমির রাজস্ব (খাজনা) দিচ্ছেন। দলের স্থায়ী একটি কার্যালয় করার জন্য তিনি এ জমিটি লিখে দিয়েছেন।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নতুন মেঘারগাঁও গ্রামের মৃত তায়েব উদ্দিনের ছেলে কবির আহমদ (৬৫)। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কোম্পানীগঞ্জে পরিচিত। ১৯৭০ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত।

জানা গেছে, নিজ দল আওয়ামী লীগের প্রতি ভালোবাসা থেকেই ১৯৯৮ সালে দলীয় কার্যালয়ের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নিজের ৭ শতক জমি লিখে দেন কবির আহমদ। গত ২১ বছর পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের বুধবারীবাজারে অবস্থিত ওই জমিটির ‘ভূমি উন্নয়ন কর’ পরিশোধ করে আসছেন তিনি। সেই জমিতে আজও নির্মাণ হয়নি আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়।

কবির আহমদ ও তার পরিবারের লোকজন আওয়ামী লীগ সমর্থন করার কারণে বিএনপি জোট সরকারের আমলে হয়েছেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তাকে জড়ানো হয় একাধিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলায়। মামলা হামলার শিকার বৃদ্ধ কবির এখন নিঃস্ব প্রায়। বর্তমানে দলের সুসময়ে কোথাও নেই তিনি।

কবির আহমদের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ আহমদ বলেন, ‘আমি জন্মের পর থেকে দেখে আসছি আমার বাবা আওয়ামী লীগ করার জন্য অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তবুও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আমাদের বড় করে তুলেছেন। দলের দুঃসময়ে বাবা জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছেন। আজ সুসময়ে দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগের কমিটিতে আমার বাবার স্থান হয়নি। আসলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। যাদের কখনো আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে দেখা যায়নি, তারা কমিটিতে ভালো ভালো অবস্থানে রয়েছে। আসলে সুসময়ে ত্যাগীদের সবাই ভুলে যায়।’

বৃদ্ধ কবির আহমদ বলেন, ‘আমি কখনো পদ-পদবির জন্য রাজনীতি করিনি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে এতটা বছর আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে কাটিয়ে দিয়েছি। বাকিটা জীবনও কাটিয়ে দিতে পারব। নিজের অর্থাভাবের কারণে বুধবারী বাজারের প্রধানমন্ত্রীর নামের জমিতে দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করতে পারিনি। নেত্রীর প্রতি অনুরোধ, আপনার আমানত আমি এত বছর ধরে দেখাশোনা করে আসছি। বেঁচে থাকতে ওই জমির ওপর দলীয় কার্যালয় দেখে যেতে চাই।’

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *