প্রবাসী ভাইয়ের সাথে আর দেখা হলো না তার বোনের!

গৃহিণী অঞ্জনা বিশ্বাস করেন। দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর আদমপুরে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে জেলার গোরকান এলাকায় তার বাবার বাড়িতে যান। এই ছিল তার স্বামীর বাড়ি থেকে তার জীবনের সমাপ্তি। কে জানত এই যাত্রা তার জীবনে আগামীকাল হয়ে যাবে?

শুক্রবার ট্রলার ডুবে যাওয়ার ঘটনায় তার মেয়েসহ মা ডুবে যান। অঞ্জনার ছেলে সৌরভ বিশ্বাস (১৬) এবং মেয়ে সৌরভ সাঁতরে বেঁচে যান।

অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বিজয়নগরের চম্পকনগর ঘাট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে যাওয়ার পথে লাইচকা বিলে বালু ভর্তি ট্রলারের সঙ্গে সংঘর্ষে ট্রলারটি ডুবে যায়।

সেই সময়, অঞ্জনার এক ছেলে এবং এক মেয়ে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছিল, কিন্তু অঞ্জনা এবং তার অন্য মেয়েকে লেইচকার বিলে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

হাসপাতালের গেটে অঞ্জনা বিশ্বাস নানাদ লক্ষিরানির সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, অঞ্জনা ৬/৭ মাস পর তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসছিল কারণ তার ছোট ভাই দেশত্যাগ করতে যাচ্ছিল। নৌকায় থাকার সময়ও তিনি কয়েকবার বাড়িতে ফোন করেছিলেন। নৌকা ডুবে যাওয়ার পর তার ছেলে সৌরভ ফোন করে বলল আমাদের নৌকা ডুবে গেছে। সে কাঁদছে কারণ সে তার মা এবং ছোট বোনকে খুঁজে পাচ্ছে না। আমরা খবর পেয়েছি এবং তাদের মৃতদেহ শনাক্ত করতে হাসপাতালে এসেছি।

ট্রলার ডুবে এখন পর্যন্ত ২২ টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আরো অনেক নিখোঁজ রয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, ১৪ জনের লাশ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে কারণ তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। সেই সময়, মৃতদেহ পরিবহনের জন্য আত্মীয়দের ২০,০০০ টাকা দেওয়া হয়েছিল।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১২০ জন যাত্রী বহনকারী একটি নৌকা লইস্কা বিলে ডুবে যায়। দুটি বালির বস্তার সাথে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *