ফেলে যাওয়া ২০ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিয়ে সততার পরিচয় দিলেন রিকশাচালক !!

এবার বগুড়ায় এক রিকশাচালকের সততা ও পুলিশের তৎপরতায় হারানো ২০ লাখ টাকা ৪ ঘণ্টার মধ্যে ফিরে পেয়েছেন এক ব্যবসায়ী। লাল মিয়া নামে ওই রিকশাচালক বলেন, ‘মানসের (অন্যের) টাকার উপর হামার কুন লোব নাই, এজন্ন্যি ট্যাকা পায়াও ফেরৎ দিনু।’ এ সময় টাকার মালিক রাজীব প্রসাদ রিকশাচালকের সততায় মুগ্ধ হয়ে নতুন রিকশা কেনার জন্য তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দিয়েছেন।

জানা যায়, বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার রনবাঘা এলাকার সার ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদের ‘প্রসাদ এন্ড সন্স’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি থাকেন বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায়। আজ ১৫ নভেম্বর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি শহরের ভাড়া বাড়ি থেকে রনবাঘায় যাওয়ার জন্য একটি কাপড়ের ব্যাগে ২০ লাখ টাকা নিয়ে বের হন।

বাসের জন্য শহরের সাতমাথায় যেতে তিনি রিকশায় ওঠেন। নামার সময় তিনি টাকা ভর্তি ব্যাগ রিকশায় ফেলে যান। বাসে ওঠার মুহূর্তে তিনি বুঝতে পারেন টাকা হারিয়ে গেছে। পরে তিনি সদর থানায় বিষয়টি জানান। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে রিকশাচালককে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

এ সময় রিকশাচালক লাল মিয়া জানান, যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়ার পর একটি ব্যাগ দেখতে পান তিনি। ভিড়ের মধ্যে ওই যাত্রীকে আর খুঁজে পাননি। পরে ব্যাগ খুলে টাকা দেখতে পেয়ে ভয় পেয়ে যান। টাকা ভর্তি ব্যাগ বাড়িতে রেখে এসে সাতমাথা এলাকায় ব্যাগটি ফেরত দেওয়ার জন্য টাকার মালিককে খুঁজতে থাকেন। দুই দফা সাতমাথা এলাকা ঘুরে বাড়ির নিকটবর্তী খান্দার এলাকায় গিয়ে অবস্থান নিয়ে জানার চেষ্টা করেন, কারও টাকা হারিয়েছে কিনা। খান্দার থেকে শহরের সাতমাথা এলাকার দূরত্ব খুব বেশি নয়।

এ সময় রিকশাচালক আরও জানান, অন্য কেউ যেন টাকাগুলো নিতে না পারে এবং প্রকৃত মালিকের কাছে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি খান্দার এলাকায় খবর নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তিনি জানান, টাকার মালিককে খুঁজে না পাওয়া গেলে থানায় গিয়ে টাকা জমা দেওয়ার ইচ্ছা ছিল তার।

এ সময় পুলিশ তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে লাল মিয়া পুলিশকে জানান, একটি টাকা ভর্তি ব্যাগ তার কাছে আছে। বগুড়া সদর থানা পুলিশ রিকশা চালক লাল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে টাকা উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

এরপর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে রিকশাচালক ও ব্যবসায়ীকে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা টাকার মালিক সার ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদের হাতে টাকা তুলে দেন। এ সময় ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদ রিকশাচালকের সততায় মুগ্ধ হয়ে একটি নতুন রিকশা কেনার জন্য ৫০ হাজার টাকা দেন।

এ সময় পুলিশ সুপার জানান, রিকশাচালকের সততা ছিল। ইচ্ছে করলে তিনি টাকা নিয়ে চলে যেতে পারতেন। কিন্তু সে ধরনের কিছু তাদের চোখে পড়েনি। এছাড়া সদর থানা পুলিশ দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে বলে টাকা উদ্ধারের কাজটি সহজ হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *