বই কেনার জন্য ফ্যান কারখানায় কাজ নিয়েছিলেন, জীবন গেলো আগুনে !!

গাজীপুরের সদরে একটি ফ্যান কারখানায় রোববার রাতে অগ্নিকাণ্ডে মারা গেছেন ১০ জন। তারই একজন ফয়সাল খান (২১)। ফয়সাল খান গাজীপুর জেলা শহরের কাজী আজিম উদ্দিন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। জানা যায়, লেখাপড়ার জন্য বই কেনার টাকা জোগাড় করতে কারখানায় চাকরি নেন তিনি। চাকরি শুরুর এক মাস না যেতেই আগুনে পুড়ে প্রাণ গেল তার। ফয়সালের বাড়ি গাজীপুরের সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের কালনী এলাকায়।

ফয়সালের এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে ফয়সাল বড়। বাবা সাইফুল খান কৃষক। অন্যের জমি বর্গা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। মা ফাতেমা বেগম গৃহিণী। ছোট বোন কনিকা গাজীপুর মহিলা কলেজের এইচএসসির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। ফয়সালের খালাতো ভাই নাহিদ নুর আসাদ এ সব জানিয়ে বলেন, স্থানীয় আতুরি আদর্শ বিদ্যালয় থেকে ফয়সাল খান ২০১৭ সালে এসএসসি এবং কাজী আজিম উদ্দিন কলেজ থেকে ২০১৯ সালে এইচএসসি পাস করেন। পরে একই কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগে অনার্স প্রথমবর্ষে ভর্তি হন। পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে বই কেনার টাকা জোগাড় করার জন্য চাকরি নেন কেশরিতা এলাকার লাক্সারি ফ্যান কারখানায়। তার ইচ্ছা ছিল এক মাস কাজ করার পর বেতন পেলে চাকরি ছেড়ে দেবেন এবং ওই টাকা দিয়ে বই কিনবেন।

অগ্নিকাণ্ডের পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফয়সালের লাশ সনাক্ত করেন নাহিদ। তিনি বলেন, কলেজের ক্লাসের ফাঁকে কারখানায় কাজ করতেন ফয়সাল। সকালে কলেজে ক্লাস করে বিকেল ৩টার দিকে তিনি কারখানায় কাজে যান। রোববার সন্ধ্যায় ফ্যান কারখানার তৃতীয় তলায় টিনশেডে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনে ওই শেডে কর্তব্যরত ১৯ শ্রমিকের ১০ জন ঘটনাস্থলে নিহত এবং ২ জন দগ্ধ হয়। এদিকে, সোমবার গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের সময় লাশ দাফন বা সৎকার করার জন্য কারখানার পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে নিহতের স্বজনদের দেয়া হয়েছে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *