বাংলাদেশে আসার ভিসা পেলেন না পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী !!

বাংলাদেশে আসার ভিসা পাননি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ও জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। ইসলামিক এ সংগঠনের নেতা সস্ত্রীক বাংলাদেশে আসার কথা ছিল আগামিকাল (বৃহস্পতিবার)।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিগত কাজে স্ত্রী রাজিয়া ও দেড় বছরের নাতনিকে নিয়ে বাংলাদেশে থাকার কথা ছিল সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর। কিন্তু বাংলাদেশে আসার ভিসা তাকে দেওয়া হয়নি বলে বুধবার দাবি করেছেন এই মন্ত্রী।

ভারতীয় গণমাধ্যমকে সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, ‘তিন দিন আমার অফিসের এক কর্মীকে দুই ঘণ্টা করে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে বসিয়ে রাখার পর বুধবার পর্যন্ত ভিসা দেওয়া হয়নি। কেন ভিসা দেওয়া হলো না তা নিয়েও কিছু জানানো হয়নি।’

বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীকে কোনো কারণ না দেখালেও ভিসা না পাওয়ার পেছনে রাজনীতি দেখছেন এই জমিয়তে নেতা। তিনি বলেন, ‘সম্ভবত বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে ভুল বোঝানো হয়েছে, না হলে তারা বেশি বুঝছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আমার কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। একবারেই ব্যক্তিগত সফর। আমি বাংলাদেশের কোনো সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত নই। তারপরও আমার ভিসা আবেদন বাতিল করা হল। এর পেছনে অবশ্যই রাজনীতি রয়েছে।’

তবে জমিয়তে উলেমা সংগঠনে থাকা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠদের দাবি, বর্তমানে দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যেভাবে তোলপাড় হচ্ছে তার মধ্যে সিদ্দিকুল্লাহ বাংলাদেশে গেলে ভারত সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হতে পারে-এমন আশঙ্কা থেকেই হয়ত তাকে ভিসা দেয়া হয়নি।

সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী অন্য এক ঘনিষ্ঠ দাবি করেন, ‘গোটা রাজ্যে সিএএ বিরোধী আন্দোলনে অন্যতম প্রধান মুখ সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। গত ২২ ডিসেম্বরের জনসমাবেশ থেকে তা আরও স্পষ্ট। তাকে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে যেতে দিলে কূটনৈতিক স্তরে সমস্যা হতে পারে-এমন আশঙ্কা থেকেই সম্ভবত বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ না দেখিয়েই ভিসা দেয়নি।’ অন্য একটি পক্ষ অবশ্য দাবি করছে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের চাপেই ভিসা দেয়নি বাংলাদেশ।

তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে পাওয়া নথি অনুযায়ী, ১৩ ডিসেম্বর তারা জানিয়ে দিয়েছে, সিদ্দিকুল্লাহ বাংলাদেশ সফর নিয়ে তাদের কোনো সমস্যা নেই। সেই অনুযায়ী ‘নো অবজেকশন’ও দিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ওই নথি অনুযায়ী, ২৫ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভিসার আবেদন করেছিলেন মন্ত্রী। রাজ্যের কোনো মন্ত্রী বিদেশ যেতে চাইলে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন দরকার হয়।

এ বিষয়ে সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, ‘আমি ৫ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করি। ৭ ডিসেম্বর সেই অনুমোদন পাওয়ার পর মুখ্যসচিবের মাধ্যমে আবেদন যায় সাউথ ব্লকে।’

সিদ্দিকু্ল্লাহর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, প্রথমে তিনি সিলেটের একটি মাদ্রাসায় যাবেন প্রতিষ্ঠানের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে। সেখান থেকে শাহজালাল মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন। সিলেটেই মন্ত্রীর স্ত্রীর আত্মীয় থাকেন। সেখানেও যাওয়ার কথা ছিল তাদের। সঙ্গে ঢাকা শহরে মন্ত্রীর এক আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল। সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, ‘গোটা ঘটনায় আমি অত্যন্ত ব্যথিত।’

সূত্রঃ যুগান্তর

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *