বাংলা ভাষায় বিদ্যুৎ বিলের কপি করার দাবিতে বৃদ্ধের অবস্থান !!

এবার বিদ্যুৎ বিলের কপি বাংলা ভাষায় তৈরির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব নামে এক ব্যক্তি। আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার বেলা ১২টা থেকে নীলফামারী জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্ত্বরে ব্যানার সাঁটিয়ে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করেন তিনি।

এ সময় তিনি জেলার ডোমার উপজেলার বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির সভাপতি। ভাষার মাসে তার অভিনব অবস্থান কর্মসূচি নজর কাড়ে উপস্থিত লোকজনের।এ সময় তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন সর্বস্তরের মানুষ। পিডিবির অধীনে বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিপণন কাজে নিয়োজিত নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কম্পানি সেই বিদ্যুৎ বিল গ্রাহককে প্রদান করছেন ইংরেজি ভাষায়। সাধারণ গ্রাহক ওই ভাষা বুঝতে না পেরে পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়।’

এদিকে আজ বেলা ১২টার আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত্বরে এসে নিজ হাতে সীমানা প্রাচীরে দাবি সম্বলিত ব্যানার টাঙান। এরপর একা বসে পড়েন ব্যানারের সামনে। এ সময় উপস্থিত জনতা ভিড় জমায় সেখানে। ব্যানারের লেখা পড়ে এবং কথা শুনে দাবির প্রতি সমর্থন জানান সকলে।

এ সময় এক ঘণ্টা ওই কর্মসূচি শেষে স্মারকলিপি প্রদানের জন্য প্রবেশ করেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। এ সময় জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার নাহিদ হাসান।

এ ব্যাপারে গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব বলেন, ‘দীর্ঘ সংগ্রামের পর আমরা পেয়েছি বাংলা ভাষা। অথচ সেই ভাষা আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে ইংরেজি ভাষায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ বিল। অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত ৮০ ভাগ গ্রাহক সে ভাষা বুঝতে না পেরে হচ্ছেন হয়রানির শিকার, বাড়ছে জনদুর্ভোগ।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘মা’তৃ’ভাষাপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ সভায় বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন এবং বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার জোর দাবি জানান। সেখানে দেশের সাধারণ মানুষকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে ইংরেজি ভাষার বিদ্যুৎ বিল।’

তিনি বলে, ‘২০১৪ সালের ১৫ মে সকল অফিস আদালতসহ সর্বত্র বাংলা ভাষা ব্যবহারে সময় বেধে দিয়েছিল দেশের উচ্চ আদালত। বিদ্যুৎ বিভাগ গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ বিল বাংলায় প্রদানের আদেশ জারি করেছিল ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট। কিন্তু অদ্যাবধি সেটি বাস্তবায়ন হয়নি।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আগত জলঢাকা উপজেলার কৈমারী গ্রামের কৃষক ওমর ফারুক ওই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘লেখাপড়া কম জানেন বেশীরভাগ বিদ্যুৎ গ্রাহক। ইংরেজি ভাষার ওই বিল বুঝতে না পেরে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন তারা। বাংলায় হলে সে বিড়ম্বনা অনেকটাই অবসান ঘটবে।’

এ সময় দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করে নীলফামারী নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নওশাদ আলম বলেন, ‘বিলটি ইংরেজির পরিবর্তে বাংলা ভাষায় হলে সকল গ্রাহকের বুঝতে সুবিধা হবে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।’

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *