ভারতীয়দের ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবির সঙ্গে পাহারা দিচ্ছে গ্রামবাসী !!

ভারতের আসামের নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদপড়া লোকজন রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারে, এমন শঙ্কা থেকে রাত জেগে বিজিবির সঙ্গে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন রাজশাহীর চরখানপুর গ্রামের আড়াইশ বাসিন্দা।

এর আগে গত ২৮ নভেম্বর রাত থেকে পালাক্রমে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন তারা। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত সীমান্ত পাহারায় থাকছেন গ্রামবাসী। এর আগে বিষয়টি নিয়ে ২৮ নভেম্বর চরখিদিরপুরে গ্রামবাসীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজশাহী ১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের চরখানপুর সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা।

এ ব্যাপারে গ্রামবাসী বলছেন, ওই বৈঠকে ফাঁড়ির নায়েক সুবেদার নজরুল ইসলাম সীমান্তে ভারতীয় অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গ্রামবাসীর সহায়তা চান। বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এরশাদুল হক ও কোহিনুর বেগমসহ সীমান্তের তিন গ্রামের লোকজন অংশ নেন। বিজিবির আহ্বানে সাড়া দিয়ে গ্রামবাসী ওইদিন রাত থেকে নেমে পড়েছেন সীমান্ত পাহারায়। প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত একদল গ্রামবাসী সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন। আরেক দল পাহারায় নামছেন রাত ১২টা থেকে পরদিন ভোর ছয়টা পর্যন্ত। গ্রামবাসীকে উৎসাহ দিতে খাবারের ব্যবস্থা করেছে বিজিবি।

গতকাল রবিবার রাতে পদ্মা নদী পার হয়ে চরখানপুরে গিয়ে দেখা যায়, টর্চলাইট ও লাঠি হাতে নিয়ে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা। সীমান্তের ১৬৩-১ এস পিলারের পাশে দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য এরশাদুল হকসহ ১০ জন বাসিন্দা। তাদের সঙ্গে বিজিবির সদস্যরাও ছিলেন।

এদিকে গ্রামটির পশ্চিম পাশে বড় একটি মাঠের পুরো অংশই ভারতীয় সীমানার মধ্যে পড়েছে। মাঠের ধার দিয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত রেখা। এ সীমান্ত রেখা বরাবর দাঁড়িয়ে থেকে তারা অনবরত টর্চলাইট ঘোরাচ্ছিলেন। একবার ডান পাশ থেকে এক জোড়া টর্চের আলোয় মাঠ আলোকিত হয়ে উঠছিল আবার বাঁ পাশ থেকে আরেক দলের টর্চের আলো পড়ছিল।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য এরশাদুল হক জানান, বিজিবির প্রস্তাব অনুযায়ী গ্রামের মানুষকে বুঝিয়ে এ দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। পালা করে গ্রামের সবাই এ দায়িত্ব পালন করছেন। ওই সীমান্ত পিলারের কাছে পাহারায় আবদুস সাত্তার নামের একজন বয়স্ক বাসিন্দাকেও দেখা যায়। তিনিও একটি লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন সবার সঙ্গে।

এ বিষয়ে বিজিবির চরখানপুর সীমান্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নজরুল ইসলাম বলেন, গত ২৭ নভেম্বর তারা জানতে পারেন ভারত থেকে ওই সীমান্তপথে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। এ নিয়ে পরদিনই তিনি গ্রামের ইউপি সদস্য এরশাদুল হক ও কোহিনুর বেগমকে ডেকে গ্রামবাসীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে বিজিবির সঙ্গে সীমান্ত পাহারায় থাকতে সম্মত হন গ্রামবাসী। ওই রাত থেকেই সীমান্ত পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *