ভারতীয় দুই গুপ্তচরকে গ্রে’ফতার করল পাকিস্তান !!

ভারতীয় দুই গুপ্তচরকে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীর সীমান্ত এলাকা গিলগিত-বালতিস্তান এলাকা থেকে গ্রে’ফতার করেছে পাকিস্তান। শুক্রবার (১২ জুন) লাইন অব কন্ট্রোল সীমানা অতিক্রম করে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে প্রবেশ করায় তাদের গ্রে’ফতার করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন-এর খবরে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত দুইজনকে সীমান্তরক্ষীরা গ্রে’ফতারের পর গিলগিট-বালতিস্তানের পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে। গ্রে’ফতারের পর তাদের কাছ থেকে ভারতীয় মুদ্রা, ভারতীয় পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়েছে। তাদের গ্রে’ফতারের বিষটি গিলগিটের পুলিশ কর্মকর্তা রাজা মির্জা হাসান গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, তাদের দুইজনকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য পাকিস্তানে পাঠিয়েছে। তারা সীমানা অতিক্রম করার পরপরই গ্রে’ফতার হন।

ওই দুই জনের নাম নুর মোহাম্দ ওয়াদি ও ফিরোজ আহমেদ লন। দু’জনই ভারতের কাশ্মীরের বন্দীপুর জেলার টেনসিল গুরেজ নামক গ্রামের বাসিন্দা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার কথা মতো তারা পাকিস্তানে প্রবেশ করার কথা স্বীকার করেছেন বলে ডনের খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।

লন জানিয়েছেন, তিনি স্নাতক সম্মান পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর কৃষি কাজ করতেন। তখন গুরেজ এলাকায় রউফ নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে তার নুর মোহাম্মদের সঙ্গে পরিচয় হয়। রউফ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তাদের দুই জনের বৈঠকের ব্যবস্থা করে। লন জানিয়েছেন, ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আমাদের পাকিস্তানে প্রবেশ করে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রস্তাব দেন। প্রথমে আমরা রাজি ছিলাম না। কিন্তু তিনি হুমকি দেন, আমরা রাজি না হলে আমাদের এবং আমাদের পরিবারের সদস্যদের হ’ত্যা করা হবে।

তিনি জানিয়েছেন, ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাদের নিশ্চিত করেছেন যে, যদি তারা দু’জনের পাকিস্তানে গিয়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম করে তাহলে তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবে। এই কাজের জন্য তাদের ১ লাখ রুপি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়। দুজনকে কিছুটা প্রশিক্ষণ দেয়া হয় কিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করতে হবে এবং গরু খোঁজার অভিনয় করতে হবে। গরু খোঁজার অভিনয় করতে গিয়ে সেখানে টহলরত সামরিক সদস্যদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং সামাজিকমাধ্যম হোয়াটঅ্যাপের মাধ্যমে বিস্তারিত জানাতে হবে।

এর আগে গত মাসে কাশ্মীরে এক পাকিস্তানি নাগরিকের পায়রাকে গুপ্তচর পায়রা সন্দেহে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। পুলিশ সেটিকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। ভারতের কাঠুয়া সীমান্তে চর সন্দেহে আটক পায়রাটিকে মুক্তি দিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। কুঠুয়ার যে এলাকা থেকে পায়রাটিকে আটক করা হয়েছিল সেখানেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে মুক্তি পাওয়ার পর পায়রাটি তার মালিকের কাছে ফিরেছে কিনা তা জানা যায়নি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনটিভির খবরে বলা হয়, ২৮ মে পায়রাটিকে মুক্তি দেয়া হয়। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, সীমান্তের যে অংশ থেকে সেই পায়রাকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, সেই এলাকায় ছেড়ে আসা হয়। পায়রাটির পায়ে ট্যাগ লাগানো আর শরীরে গোলাপি তাগা জড়ানো ছিল। পায়রাটি উড়ে আসার পর তার ওপর নজরদারি করতে আটক করা হয়েছিল। যদিও সীমান্তের ওপারের এক গ্রামবাসী সেই পায়রাকে তার পোষ্য বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু সেই সময় সন্দেহ প্রশমন হয়নি ভারতীয় সেনার।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *