ভারত সীমান্তে ব্যাপক উত্তেজনা – শত শত অস্ত্রসজ্জিত গাড়ি পাঠিয়েছে চীন !!
এখনও উত্তেজনা কমেনি ভারত-চীন সীমান্তে। লাদাখ সীমান্তে এবার শত শত সামরিক গাড়ি মোতায়েন করেছে চীন। সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সং’ঘর্ষের আগেই গোলাবারুদ ও সেনাবোঝাই এসব গাড়ি লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল সীমানার কাছে গালওয়ান নদী উপত্যকায় আনা হয়। স্যাটেলাইট চিত্রে সশস্ত্র সামরিক গাড়ি মোতায়েনের এসব দৃশ্য উঠে এসেছে।
গত সোমবার রাতে এ গালওয়ান ভেলিতেই দু’পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘ’র্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ভারতের ২৩ জওয়ান নিহত হন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর মতে, চীনা সেনাবাহিনীরও অন্তত ৪৫ জন নিহত হন।চীন দাবি করেছে, ভারতীয় সেনারা প্রথমে এলএসি সীমানা লঙ্ঘন করেছিল। কিন্তু ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সং’ঘর্ষ নিয়ে মিথ্যা বলছে বেইজিং। প্রমাণ হিসেবে স্যাটেলাইটের ইমেজকে উপস্থাপন করছেন তারা।
সং’ঘর্ষের আগে ও পরে পুরো উপত্যকার সব ছবিই প্লানেট ল্যাবের স্যাটেলাইট ইমেজে ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার সং’ঘর্ষস্থলের স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করা হয়। ধারণ করা ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভারতের গালওয়ান নদী উপত্যকা বরাবর সারি সারি মোতায়েন করা চীনা সেনাবাহিনীর (পিএলএ) বেশ কয়েকটি সামরিক ট্রাক।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সং’ঘর্ষের আগে অন্তত ২শ সশস্ত্র গাড়ি মোতায়েন করা হয়। এছাড়া বেশ কয়েকটি সেনা তাঁবুও টানানো হয়। সং’ঘর্ষের পরও উপত্যকা থেকে এগুলো সরা’নো হয়নি।গালওয়ান নদী বা গালওয়ান নদী উপত্যকা চীনের সীমানা রেখার পশ্চিমে ও আকসাই চীনের ভারতীয় অংশে অবস্থিত। ১৯৬০ সালে এ উপত্যকার পশ্চিম সীমা শায়ক নদী উপত্যকা সংলগ্ন পার্বত অঞ্চল পর্যন্ত দাবি করেছিল চীন। ফলে ১৯৬২ সালে দুই দেশের মধ্যে অচলাবস্থা। এর কয়েকমাস পরেই ভারত ও চীনের যুদ্ধ বেধে যায়।
আকসাই চিন এলাকা থেকে লাদাখ ঘিরে বয়ে চলা প্রাচীন গালওয়ান নদী ভারত ও চীনের চলমান সং’ঘাতের প্রধান কারণ। বর্তমানে ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে এ উপত্যকাটি দুই দেশের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।চীন ও ভারতের মধ্যে চলমান এই সং’ঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসং’ঘ। একই সঙ্গে, উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
গেল মঙ্গলবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতি’সংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস এ আহ্বান জানান।অ্যান্তনিও গুতেরেসের পক্ষে তাঁর মুখপাত্র এরিক কানেকো বলেন, ‘আমরা ভারত ও চীনের মাঝামাঝি সীমান্ত লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) সং’ঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। তবে এটা ইতিবাচক যে, উভয় দেশ উত্তেজনা নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে।’