ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে চীন – শি জিনপিংয়ের সতর্ক বার্তা !!

প্রাণঘাতী নতুন করোনা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দেশটিতে লুনার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নতুন বছর শুরু উপলক্ষ্যে মন্ত্রিসভার এক বিশেষ বৈঠকে শি জিনপিং এ সতর্ক বার্তা দেন। দেশ ‘মারাত্মক পরিস্থিতি’র মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলে সিনিয়র কর্মকর্তাদের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জিনপিং। উহান শহরে প্রথম লক্ষণ দেখা যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে ৫৬ জন মারা গেছে এবং প্রায় ১৪০০ মানুষ সংক্রমিত হয়েছে।

এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ চীনের পক্ষে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না। একাধিক শহরে ঢোকা এবং শহর থেকে বের হওয়ার ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। রবিবার থেকে উহানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পত্রিকা পিপল’স ডেইলি জানিয়েছে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জরুরি সেবা দানের লক্ষ্যে ১৩০০ শয্যাবিশিষ্ট দ্বিতীয় একটি হাসপাতাল নির্মাণকাজ শুরু করা হবে এ সপ্তাহের মধ্যেই। এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল নির্মাণকাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। উহান শহর যে প্রদেশে অবস্থিত, সেই হুবেই প্রদেশে বিশেষজ্ঞ সেনা চিকিৎসা দল পাঠানো হয়েছে।

ভাইরাস বিস্তার রোধ করা কেন কঠিন?

যুক্তরাজ্যের এমআরসি সেন্টার ফর গ্লোবাল ইনফেকশাস ডিজিস অ্যানালাইসিসের বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, চীনের ভেতরে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব নাও হতে পারে। তারা বলছেন, ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে নিজেকে রক্ষা করতে পারে, যেটি এই ভাইরাসের এত বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়তে পারার ‘একমাত্র যৌক্তিক ব্যাখ্যা।’ বিজ্ঞানীদের অনুমান, একজন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি গড়ে আড়াইজন মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে।

এই সংস্থাটি চীনা কর্তৃপক্ষের প্রয়াসের প্রশংসা করেছে, কিন্তু এরকম আশঙ্কাও প্রকাশ করছে যে ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ছড়িয়ে পড়ার হার ৬০ শতাংশ কমাতে হবে। বিজ্ঞানীদের মতে এই পদক্ষেপ নিশ্চিত করা সহজ নয়। ভাইরাস সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে আনতে এমন রোগীদেরও আলাদা করতে হবে যাদের মধ্যে সাধারণ সর্দিজ্বরের সামান্য লক্ষণও দেখা গেছে। অন্যদিকে, ল্যাংকাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল ভাইরাস আক্রান্তদের সংখ্যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের ধারণা অনুযায়ী এবছরে ১১ হাজার মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের অনুমান সত্যি হলে এই সংখ্যা সার্স-এ আক্রান্তের সংখ্যার চেয়ে বেশি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *