মাগফেরাতের দশকে যে দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়বেন !!

মাহে রমজানের রহমতের দশক অতিক্রম করে প্রবেশ করেছি মাগফেরাতের দশকে। আজ মাগফেরাতের দশকের প্রথম রোজা রাখার সৌভাগ্য পাচ্ছি। মাগফেরাতের এ দশকে প্রতিটি মুমিনের আশা আল্লাহ পাক যেন তাকে ক্ষমা করে দেন।

বিশ্বব্যাপী যদিও ম’হামা’রি করোনাভা’ইরাসের কারণে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে তারপরও রোজা পালনে ঐশী শান্তি উপভোগ করছেন মুসলিম উম্মাহ। মাগফেরাতের এ দশকে উঠতে-বসতে সর্বাবস্তায় আমরা এ দোয়া পাঠ করব-

اَسْتَغْفِرُ اللهَ رَبِّىْ مِنْ كُلِّ ذَنْبٍ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ

উচ্চারণ : ‘আসতাগফিরুল্লাহ রব্বি মিন কুল্লি যামবিন ওয়াতুবু ইলাইহি।’
অর্থ : ‘আমি আমার প্রভু আল্লাহর কাছে আমার সমুদয় পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তারই দিকে প্রত্যাবর্তন করছি।’

মাগফিরাতের এ দশকে আল্লাহ তাআলার ক্ষমা লাভের জন্য আমরা পবিত্র কুরআনের এ দোয়াগুলো অধিকহারে পাঠ করতে পারি-

– سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ

উচ্চারণ : ‘সামি’না ওয়া আতানা গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির।’
অর্থ : ‘আমরা (আল্লাহ তাআলার আদেশ) শুনলাম ও মানলাম, হে আমাদের প্রভু-প্রতিপালক! আমরা তোমারই কাছে ক্ষমা চাই আর তোমারই দিকে সবার ফিরে যেতে হবে।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২৮৫)

– رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ : ‘রাব্বানা মা খালাকতা হাজা বাতিলাং সুবহানাকা ফাকিনা আজাবান নার।’
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! তুমি এ বিশ্বজগতকে বৃথা সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র। সুতরাং তুমি আমাদের আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯১)

– لَئِن لَّمْ يَرْحَمْنَا رَبُّنَا وَيَغْفِرْ لَنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ

উচ্চারণ : ‘লা ইল্লাম ইয়ারহামনা রাব্বুনা ওয়া ইয়াগফির লানা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।’
অর্থ : ‘আমাদের প্রতিপালক! আমাদের ওপর যদি কৃপা না করেন এবং আমাদের ক্ষমা না করেন তাহলে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ১৪৯)

হজরত আদম আলাইহিস সালাম যে দোয়া পাঠ করে আল্লাহ তাআলার ক্ষমার চাদরে আবৃত হয়েছিলেন সেই দোয়াটিও আমরা মাগফিরাতের এ দশকে অনেক বেশি পাঠ করতে পারি। তিনি দোয়া করেছিলেন-

– رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ

উচ্চারণ : ‘রাব্বানা যালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফির লানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।’অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু-প্রতিপালক! নিশ্চয় আমরা আমাদের প্রাণের ওপর অত্যাচার করেছি আর তুমি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না কর ও আমাদের প্রতি কৃপা না কর তাহলে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ২৩)

আমরা যেন রমজানের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো বৃথা নষ্ট না করে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগি ও দোয়ায় অতিবাহিত করি। সেই সাথে প্রত্যেক রোজাদারকে গভীরভাবে মনে রাখতে হবে যে, রোজা আদায়ের অর্থ কতগুলো বিষয় থেকে বেঁচে থাকা ও কতগুলো বিষয়কে বর্জন করা।

রমজানের রোজায় বাহ্যিকতার কোনো আমল নেই। অন্য যে কোনো ইবাদত মানব দৃষ্টে ধরা পড়ে কিন্তু রোজা এমন এক ইবাদত যা শুধু আল্লাহই দেখতে পান, যার মূল শিকড় রোজাদার ব্যক্তির হৃদয়ে লুকায়িত তাকওয়ার সাথে সংযুক্ত।

রোজার মাধ্যমে মানুষ স্বীয় কামনা-বাসনাকে দমন করে নিজকে ফেরেশতাগণের মোকাম অতিক্রম করাতে সক্ষম হয়। সে পৌঁছে যায় প্রশান্তিপ্রাপ্ত আত্মা পর্যায়ে। রোজার দ্বারা আত্মাকে জ্যোতির্ময় করার সুযোগ পাওয়া যায়। আমরা যদি আল্লাহ পাকের আদেশ-নিষেধ পরিপূর্ণভাবে পালন করে জীবন অতিবাহিত করি তাহলে আশা করা যায় তিনি আমাদেরকে ক্ষমা করবেন।আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে মাগফেরাতের দশক থেকে পরিপূর্ণ লাভবান হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *