মামলার সাক্ষীকে ওসির সামনে মেরে ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ !!

এবার পাবনায় ধ’র্ষণ মামলার এক সাক্ষীকে পুলিশ ডেকে নেওয়ার পর মেরে হাড় ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের লোকজনের বিরুদ্ধে। আব্দুল আলীম নামে এই সাক্ষীকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

জানা যায়, আলীম সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে।এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধ’র্ষণ মামলার সাক্ষী তিনি। এই মামলার প্রধান আসামি মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফ।’

তিনি আরও বলেন, ‘সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাইরুল ইসলাম মামলা তদন্তের বিষয়ে কথা বলার জন্য গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আমাকে গাছপাড়া মোড়ে ডেকে নেন। আমি সেখানে গেলে পুলিশের সামনেই চেয়ারম্যান শরিফের ছোট ভাই আরিফুল ও তার লোকজন আমাকে লোহার রড ও হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটায়। পরে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে মোটরসাইকেলে করে চলে যায়। মারধর শুরুর পর পরিদর্শক খাইরুল চলে যান।’

এরপর স্থানীয়রা তাকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের নার্স লাইলি খাতুন বলেন, ‘তার পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। প্লাস্টার করা হয়েছে। প্রথম দিন অবস্থা আশঙ্কাজনক মনে হওয়ায় চিকিৎসকরা রাজশাহী মেডিকেলে পাঠিয়েছিলেন। পরে আশঙ্কামুক্ত হওয়ায় স্বজনরা তাকে আবার পাবনায় নিয়ে আসেন।’

এদিকে ঘটনাস্থলের পাশের একটি দোকানের ভিডিও ফুটেজে মারধরের সময় পুলিশের পরিদর্শক খাইরুল ইসলাম ও একজন কনস্টেবলকে দ্রুত চলে যেতে দেখা গেছে।এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মঙ্গলবার পরিদর্শক খাইরুলের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তিনি রাজশাহীর আদালতে সাক্ষ্য দিতে গেছেন বলে থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘হামলার ঘটনাটি আকস্মিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতি আছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোয়েন্দা) শামিমা আক্তারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে আহত আব্দুল আলীমের স্ত্রী রুমা খাতুন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেছেন।এ ব্যাপারে পুলিশ কর্মকর্তা গৌতম কুমার বলেন, ‘পুলিশ ইতোমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে কোনো আসামির নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।’

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *