Probashi News

মালয়েশিয়ায় বেঁচে থাকার লড়াই করছে প্রবাসীরা !!

সোহেল মোল্লা এবং তার আট সহকর্মী প্রতিবছর ঈদের আগে বাংলাদেশে স্বজনদের কাছে টাকা পাঠাতেন। সেই টাকা দিয়ে নতুন পোশাক কেনা হতো, হতো ঈদের আরও বাজার-সদাই। আর প্রবাসে থেকেই পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদ আনন্দে মেতে উঠতেন তারা। কিন্তু এই বছর এমন আনন্দ আসেনি তাদের জীবনে। মহামারি করোনাভা’ইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন অবস্থায় কোয়ারেন্টাইনে থেকে বেঁচে থাকার লড়াই করে যাচ্ছেন তারা।

করোনাভা’ইরাস প্রতিরোধে মালয়েশিয়ায় সরকার ঘোষিত লকডাউনে গত আড়াই মাস ধরে কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন সোহেল মোল্লার মতো অনেক বাংলাদেশি। নিজের খাওয়ার টাকাই পকেটে নেই তাদের। সে বিবেচনায় দেশে টাকা পাঠানোর চিন্তাও করতে পারেন না তারা। এই অবস্থায় তাদের দিন কাটছে চরম অনিশ্চয়তায়।

সোহেল জানান, লকডাউনের প্রথম দিকে নিয়োগকর্তা ৫০০ রিঙ্গিত দিয়েছিলেন এবং কিছু খাবার দিয়েছিলেন। তবে পরে এ ৫০০ রিঙ্গিত তাদের বেতন থেকে কেটে নেয়া হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সাধারণত ঈদে আমরা বিরিয়ানি রান্না করি, তরকারি এবং ঝাল, পোলাও, রুটি রান্না করি এবং আমাদের প্রিয় মিষ্টি সেমাই তৈরি করি … । এই বছর এটা হয়ে ওঠেনি

সোহেল ও তার বন্ধুরা পেটালিং জায়ার একটি সাবলেটে থাকেন, যা একসময় অফিস ছিল। তিনটি কক্ষেই তারা কয়জন মিলে থাকেন। রয়েছে একটি ছোট রান্নাঘর। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কড়া রোদ পড়ে বলে বিকেলে কক্ষ তিনটিতে গরম বেড়ে যায়, যা রমজানে বেশ ভুগিয়েছে সোহেলদের।

এখানে যারা রয়েছেন, বেশিরভাগই নির্মাণ কাজ করেন। যেহেতু সরকার সমস্ত নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে, কখন তারা কাজে ফিরতে পারবেন, তা জানেন না কেউ।আব্বাস (৩০) নয় বছর আগে মালয়েশিয়ায় এসেছিলেন। আব্বাসের থাকার জায়গাটি সোহেলের চেয়ে কিছুটা ভালো।

আব্বাস বলেন, মালয়েশিয়ায় আসার কিছুদিন পর আমার বাবা মারা গেলেন। বড় বলে পরিবার এবং চার ভাই-বোনকে দেখাশোনা করার ভার এখন আমার ওপর।‘আমি গড়ে ১৮০০ রিঙ্গিত উপার্জন করি এবং প্রতিমাসে ১০০০ রিঙ্গিত বাড়ি পাঠাই। ঈদের সময় টাকা পাঠাতে পারিনি। কতোইনা কষ্টে রয়েছে দেশে থাকা পরিবার। গত আড়াই মাসে কোনো টাকাই দেশে পাঠাতে পারিনি।’

এমন পরিস্থিতিতে ভাই-বোনদের আকুতি তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে থাকা ভাই-বোনরা চায় আমি বাড়ি ফিরে যাই। তবে টিকিটের জন্য আমার কাছে টাকা নেই।নাসিরউদ্দিন সেরেন (২৪) নামে আরেকজন বলেন, প্রতিবছরই ঈদে বন্ধুরা মিলে বেড়াতাম। এবার এই পরিবেশ নেই। কারণ নিজেই বাচঁতে পারছি না।

‘আমাদের কাছে কোনো খাবার কেনার টাকা না থাকলেও ঘর ভাড়া দিতে হবে। আমরা কয়েক মাস ধরে ভাড়া দিতে পারিনি। তারা আমাদের প্রতিজনের কাছে ঘর ভাড়া বাবত ১৫০ রিঙ্গিত চার্জ করছে’— বলেন নাসিরউদ্দিন।একই কথা বলছিলেন আহমদ আলী (২৭)। লিংকন ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ২০১৮ সালে স্নাতক হওয়ার পরও আলী কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না। পরে অফিস ক্লিনার হিসাবে কাজ নেন। তিনি ১১ জনের সাথে থাকেন। তাদের মধ্যে চারজন তরুণ শিক্ষার্থী।

আলীর ভাষ্যে, তিনি লকডাউনে থাকা যুবকদের বেঁচে থাকার লড়াই করতে দেখেছেন। তাদের কিছু খন্ডকালীন চাকরি ছিল, কিন্তু এখন কোনো কাজ, খাবার, অর্থ নেই, তাদের মানসিক অবস্থা বিপর্যস্ত। অনলাইন ক্লাস করতে হয়, কিন্তু কোনো টাকা না থাকায় তারা অনলাইন ক্লাসেও মনোনিবেশ করতে পারছেন না।

মালয়েশিয়ায় বিদেশী কর্মীর সংখ্যা নিয়ে ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি হিসাবে দেশটিতে প্রায় ১৮ লাখ থেকে ৩৩ লাখ বিদেশি কর্মী রয়েছেন। তবে অন্য হিসাব মতে এ সংখ্যা ৩৪ লাখ থেকে ৫৫ লাখ পর্যন্ত হতে পারে।২০১৮ সালে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়, মালয়েশিয়ায় বেশিরভাগ কর্মী ইন্দোনেশিয়া থেকে আসেন। তারপর নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে আসেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, বিদেশি কর্মীদের ৮০ শতাংশই পুরুষ।

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button