মায়ের চিকিৎসার জন্য ঋন করে অটোরিক্সা ক্রয়। কিন্তু কি ঘটে গেল তার জীবনে!

অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করার জন্য ধার দেনা করে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অটোরিক্সা ক্রয় করলেও, ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার অটোরিকশা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

গত বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ময়মনসিংহ মহাসড়কের সানি মোড়ে তার অটোরিকশা ছিনতাই করা হয়। এভাবে একটি স্বপ্ন মারা যায়, এতে করে একটি স্বপ্নের মৃত্যু হয়, বৃদ্ধ মায়ের ঔষধ কেনা বন্ধ হয়ে যায়।

ঘটনার শিকার সুকামাল বলেন, তিনি তার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা ও ওষুধের জন্য অর্থ সংগ্রহের জন্য একটি এনজিও থেকে লোন নিয়ে ব্যাটারি চালিত মিশু অটোরিকশা কিনেছেন। যার সাহায্যে তিনি পৃথিবীর অবস্থা কিছুটা হলেও ধরতে পেরেছিলেন। এছাড়া তিনি এনজিওর কিস্তি সহ পাওনাদারদের টাকা দিতেন।

“আমার আয়ের একমাত্র উৎস ছিল অটোরিকশা, যা আমি আমার অসুস্থ মা এবং তার পরিবারের ওষুধ দিয়ে দেখতাম,” কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুকোমল বলেন। আমার স্ত্রীর গর্ভধারণের কয়েক মাস পরে প্রসব করা হবে, তার উপরে এনজিওর লোকেরা কিস্তির টাকার জন্য ঘরে বসে আছে, আমার সামনে সবকিছু অন্ধকার দেখে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

সুকমল আরও বলেন, তার বাবা অনেক আগে মারা গেছেন। কয়েক বছর আগে তিনি খুব কষ্টে তার ছোট বোনকে বিয়ে করেছিলেন। একটি পিতৃহীন পরিবারে, কয়েক বছর আগে, তার মা একটি মস্তিষ্কের স্ট্রোকের শিকার হন এবং তারপরে চিকিৎসার জন্য দার্দেনায় যেতে হয়েছিল, কিন্তু তাকে ওষুধ দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। এই অটোরিকশাটি ছিল মায়ের চিকিৎসা ও সংসার চালানোর একমাত্র পথ।

পুলিশ জানায়, মৃত সুভাষ চক্রবর্তীর বাবা সুকমল (৪০) মোচারভিটা ভালুকা পৌর এলাকার ৩ নং ওয়ার্ডে থাকেন। বৃহস্পতিবার সকালে যখন তিনি ভাড়া নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সানি মোড়ে পৌঁছান, তখন একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাকে গাড়ি থামাতে বলেন এবং তিনি নিজেকে ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দেন। এ সময় অজ্ঞাত ব্যক্তি অটোরিকশায় বসে তাকে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য ব্যক্তির কাছ থেকে চাবি আনতে বলেন। তিনি চাবি আনতে গেলে লোকটি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।

ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি এবং ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা খুঁজে বের করার পদক্ষেপ নিচ্ছি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *