মা-মা বলে কাঁদছে শিশু মাহিমা, কাঁদলো নার্সরাও !!

শিশু মাহিমার মা আর নেই। তবে ছোট্ট শিশু মাহিমা এখনও জানে না তার মমতাময়ী মা আর বেঁচে নেই। ঘাতক ট্রেন কেড়ে নিয়েছে তার মায়ের প্রাণ। তাকে কোলে নিয়ে কপালে চুমু এঁকে আর হয়তো কেউ গাইবে না ঘুমপাড়ানি গান! মা মা বলে চিৎকার করে কাঁদছে শিশু মাহিমা। চিৎকার শুনে কেউ এগিয়ে আসছে না। তাকে কোলে নিয়ে নার্সরাও কাঁদছে। কি করবে বুঝতে পারছে না কেউ।

আজ সকাল ৮টার দিকে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে আনা হলে মাথায় দুটি সেলাই দিয়েছে ডাক্তাররা। এরপর থেকে তার ঠাঁই হয় নার্সদের কোলে। কোনোভাবেই যখন মাহিমার কান্না থামাতে পারছিল না নার্সরা তখন সাহায্য নিয়েছে চকলেট ও চিপসের। এগুলো পেয়ে কিছুক্ষণ কান্না থামলেও খুঁজতে শুরু করে তার মাকে। তখনও নার্সরা জানে না তার মা কোথায়, বেঁচে আছে কী মারা গেছে?

হঠাৎ করেই মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে শাহ আলম নামে এক যুবক হাসপাতালে এসে দাবি করে শিশু মাহিমা তার ভাতিজি। এ সময় শিশুটির ফুফু আয়েশা বেগমও সঙ্গে আসেন। তারা জানান মাহিমার বাবার নাম মাঈনউদ্দিন এবং মায়ের নাম কাকলী বেগম।

চাচাকে দেখেই কোলে চলে যায় মাহিমা। এ সময় তাদের ভাবি কাকলী বেগমকে কোথাও না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত আলী এসময় তাকে বার বার সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। একই সময় শিশুটির আম্মা আম্মা চিৎকারে হাসপাতালের নার্সসহ উপস্থিত অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। দুপুর আড়াইটা পর্যন্তও শিশুটির মায়ের খোঁজ মেলেনি। বিকেল তিনটার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে তার চাচা ও ফুফুর হাতে বুঝিয়ে দেন।
এ সময় ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌল্লা খাঁন উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *