মুজিববর্ষ উপলক্ষে নতুন ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ শুরু করবে নির্বাচন কমিশন !!

‘জাতীয় ভোটার দিবস’ আজ সোমবার (২ মার্চ) সারা দেশে পালন করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে নতুন ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহ শুরু করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে সীমিত আকারে এই কার্যক্রম শুরু করা হবে। ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে ইসি। এ ছাড়া মুজিব বর্ষ উপলক্ষে জেলা পর্যায়ে পরিচয়পত্র সেবা সহজ করার জন্যও মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দিয়েছে সংবিধানিকব সংস্থাটি। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোটার দিবস উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নানা ধরণের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়ে থাকে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে এ বছর হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, তাই আমরা এবার আলাদা কিছু করতে চাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার এই জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা আগামীকাল ভোটার দিবসে কিছু সংখ্যক নতুন ভোটারদের হাতে স্মার্ট আইডি কার্ড তুলে দিতে চাচ্ছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা এই কার্ড তুলে দেবেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জেলা পর্যায়ে বা মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দিয়েছি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা সহজ করার জন্য। অনেকেই এখনো ভোটার হননি বা অনেকেরই এনআইডি কার্ড নেই। তাদের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা এই কার্যক্রম সহজতর করবে সেই ধরণেরই নির্দেশনা দেওয়া আছে। আর এটা শুধু মাত্র জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে। আমরা চাই বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকুক।

সিনিয়র সচিব বলেন, নতুন নিবন্ধিত নাগরিকগণের পেপার লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র মুদ্রণের জন্য জেলা নির্বাচন অফিসে প্রয়োজনীয় লিংক প্রদান করা হয়েছে। উক্ত লিংকের মাধ্যমে জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে এবারের হালনাগাদ ভোটার তালিকা হতে অর্থাৎ ২ মার্চ যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে তা হতে প্রত্যেক উপজেলার জন্য কমপক্ষে ১০ জন ভোটারের পেপার লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র জেলা হতে মুদ্রণ করে উপজেলায় বিতরণ করা হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, সোমবার সকাল ৮ টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ হতে একটি র‌্যালি বের করা হবে যা শেষ হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে গিয়ে। এরপর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিকেল ৩ টায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী মোঃ আনিসুল হক। এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মোঃ রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব)।

ইসি সূত্র জানায়, এদিন বিকেলে আলোচনা সভায় ১০ মিনিটের একটি ভোটার এবং এনআইডি সম্পর্কিত উপস্থাপনা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এছাড়া স্মার্ট কার্ড বিষয়ক অ্যাপস উদ্বোধন করা হবে। আবার কিছু সংখ্যক নতুন ভোটারদের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দেবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান বলেন, সারা দেশেই নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এ দিবসটি উদযাপন করা হবে। মূলত জনসাধারণের মধ্যে ভোটার হওয়ার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিই এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।

জানা যায়, মার্চ মাসটিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তি রচিত হয় এবং দেশপ্রেমিক শহীদদের আত্মদানের বিনিময়ে জাতীয় জীবনে একটি গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সূচনার জন্য গৌরবময় হওয়ায় ১ মার্চকে জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপনের জন্য বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু পরে ১ মার্চের পরিবর্তে ২ মার্চ এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। গণতন্ত্র, নির্বাচন, ভোটাধিকার বিষয়ে সাধারণ জনসাধারণ ও তরুণদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবছর জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপনের গুরুত্ব রয়েছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে বিশেষ করে সার্কভুক্ত দেশ এবং ফেমবোসার প্রতিনিধিত্বকারী দেশ হিসেবে জাতীয়ভাবে ভোটার দিবস উদযাপনের জন্য বর্তমান কমিশন দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য দিবসটি মূলত গণসচেতনতা ও প্রচারণামূলক হওয়ায় সাধারণ জনগণসহ তরুণ ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ, উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টির লক্ষ্যে সবার্ধিক গুরুত্বপূর্ণ দিবস। ২০১৩ সালে সার্কভুক্ত দেশগুলোর নির্বাচন বিষয়ক সংগঠন ফেমবোসা’র চতুর্থ সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে সদস্য দেশগুলো জাতীয়ভাবে ভোটার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ভোটার দিবস উদযাপনের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের তখনকার সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিষয়টি কমিশন সভায় উপস্থাপন করলে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দেন। বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হলে তা প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিলের সভায় সরকারের অনুমোদন লাভ করে।মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা পর্যায়ে পরিচয়পত্র সেবা সহজ করার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *