মৃত্যুর কয়েকঘণ্টা আগে যা করেছিলেন রুম্পা !!

মেয়ের শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা নাহিদা আক্তার পারুল। স্বজনরা তাকে স্বান্ত্বনা দিয়েও কান্না থামাতে পারছেন না। দু’দিন ধরে কিছুই খাননি। শারীরিকভাবে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন তিনি। রুম্পার মৃত্যুকে হ’ত্যাকাণ্ড দাবি করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও করেন তিনি। রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির নিহত শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। রুম্পার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরনিলক্ষীয়া ইউনিয়ের বিজয়নগর।

মা নাহিদা আক্তার পারুল বারবার চিৎকার করে বলেন, জরুরি কাজের কথা বলে গেল, ফিরল লাশ হয়ে। আমার মেয়েকে কত কষ্ট দিয়ে ওরা মেরেছে। মরার সময় মেয়েটি কতবার জানি, মা-মা বলে চিৎকার করেছে। তিনি আরও বলেন, ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রছাত্রীদের শিফট আলাদা হওয়ায় দু’দিন ধরে মেয়ের মনও খারাপ ছিল। তার সঙ্গে কারো বিরোধ ছিল কি, না তা বলতে পারছি না। বুধবার সকালে ডিম ভাজি করে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, মৃত্যুর কয়েকঘন্টা আগে বুধবার সন্ধ্যার পর রুম্পা তাদের শান্তিবাগের বাসায় নিচে চাচাতো ভাই সুমন ডেকে এনে হাতে থাকা আংটি, কানের দুল, দুটি মোবাইল ফোনসেট, পায়ের জুতাসহ দামি সব জিনিসপত্র তাঁর মাকে পৌঁছে দিতে বলেন।

ঢাকার শান্তিবাগে একটি ফ্ল্যাটে মায়ের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করতেন রুম্পা ও তার ছোট ভাই। পড়াশোনার পাশাপাশি রুম্পা টিউশনি করাতেন। গত বুধবার টিউশনি শেষে বাসায় ফেরার কিছুক্ষণ পর রুম্পা আবারও বাইরে কাজ আছে বলে বের হয়। কিন্তু এরপর রাতে আর বাসায় ফিরেনি। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি।

রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, তাঁকে হ’ত্যা করা হয়েছে কি না, সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এখনো তেমন কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে হ’ত্যা মনে হওয়ায় পুলিশ হ’ত্যা মামলা দায়ের করেছে। তবে মৃত্যুর আগে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হতে আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর রহস্য উধঘাটনে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে। আশা করছি দ্রুতই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তবে ফরেনসিক বিভাগ বলছে, রুম্পা মৃত্যুর আগে ধর্ষণের স্বীকার হয়ে হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে বুধবার (৪ ডিসেস্বর) রাতে রাজধানীর ইনার সার্কুলার রোড থেকে রুম্পার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার ভোর ৫টায় রুম্পার লাশ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের চরনিলক্ষীয়া ইউনিয়নের বিজয়নগরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে বেলা ১০টায় জানাজা শেষে পরিবারিক গোরস্থানে দাদী রুবিলা খাতুনের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *