মৃ’ত্যুহারে যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটেনকে ছাড়িয়ে শীর্ষে বেলজিয়াম !!

বিশ্বে করোনা ম’হামারীতে সবচেয়ে বেশি প্রা’ণহা’নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হলেও মৃত্যুহারে শীর্ষে বেলজিয়াম। দেশটির মৃত্যুহার ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ, আর যুক্তরাষ্ট্রে এ হার ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। এমন তথ্য দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়।কিছুদিন আগে পরিস্থিতি কিছুটা ভালোর দিকে যাওয়ায় লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছিল বেলজিয়াম সরকার। এরপরই দেশটিতে সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আ’ক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ছে রাশিয়া, ব্রাজিল ও ভারতেও। ধারণা করা হচ্ছে, এ চারটি দেশ বিশ্বের পরবর্তী করোনা হটস্পট হয়ে উঠতে পারে। খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে, বিভিন্ন দেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ মৃত্যুর হার বিভিন্ন। সাধারণত মৃত্যুর মোট সংখ্যা ও আ’ক্রান্তের মোট সংখ্যার হিসাবে মৃত্যুহার হিসাব করা হয়। কিন্তু অনেক দেশে করোনার টেস্টিং অনেক বেশি হচ্ছে। ফলে অনেক কম উপসর্গ যুক্ত ব্যক্তিও ধরা পড়ছেন।

তার ফলে সেখানে মৃত্যুর হার কম হচ্ছে। আবার অনেক দেশে পরীক্ষা কম হচ্ছে বা আ’ক্রান্ত কম ধরা পড়ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যদি বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ে সেখানে মৃত্যুর হার স্বাভাবিকভাবেই বেশি হবে। তাই মৃত্যুর হার কম মানেই দেশটিতে মৃত্যুর মোট সংখ্যা কম সেটা কখনই নয়।

হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে দেখা গেছে, বিশ্বে মৃত্যুহার সব থেকে বেশি বেলজিয়ামে। সেখানে ৪৯ হাজার ৫১৭ জন আ’ক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৭৬৫ জনের। অর্থাৎ এ দেশের মৃত্যুর হার ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ।কিন্তু এর চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েও অনেক দেশের মৃত্যুর হার অনেকটাই কম। কারণ, সেখানে আ’ক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। যেমন- যুক্তরাষ্ট্রে আ’ক্রান্ত সাড়ে ১১ লাখ, মৃত্যু হয়েছে ৬৬ হাজারের বেশি। সে হিসআবে দেশটিতে মৃত্যুহার ৫ দশমিক ৯ শতাংশ।

করোনাভা’ইরাসে ইতালিতে মৃত্যুহার ১৩ দশমিক ৭। দেশটিতে মোট আ’ক্রান্ত ২ লাখের বেশি। ইতালি থেকে প্রাণহানি কিছুটা কম হলেও যুক্তরাজ্যে মৃত্যুহার বেশি ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ। দেশটিতে আ’ক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৮৩ হাজার ছাড়িয়েছে। স্পেনে মৃত্যুহার ১১ দশমিক ৬, ফ্রান্সে ১৪ দশমিক ৭, জার্মানিতে ৪ দশমিক ১, ব্রাজিলে ৭ দশমিক ০, ইরানে ৬ দশমিক ৪, নেদারল্যান্ডসে ১২ দশমিক ৪, চীনে ৫ দশমিক ৫, কানাডায় ৬ দশমিক ৪, তুরস্কে ২ দশমিক ৭, সুইডেনে ১২ দশমিক ১, মেক্সিকোতে ৯ দশমিক ৩, সুইজারল্যান্ডে ৫ দশমিক ৯, ভারতে ৩ দশমিক ৩, পাকিস্তানে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।

এদিকে বাংলাদেশ সময় রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডওমিটারসের তথ্য অনুযায়ী- বিশ্বে করোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ লাখ ৭ হাজার ৭৮৯। মারা গেছেন ২ লাখ ৪৫ হাজার ২১৮ জন। অবস্থা আশঙ্কাজনক ৫০ হাজার ৬০৭ জনের। সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ৩০ হাজার ১৬২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আ’ক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ২৫৫ জন। মারা গেছেন ৫ হাজার ২১৫ জন, যা আগের ২৪ ঘণ্টায় ছিল ৫ হাজার ৬২৪ জন।

করোনাভা’ইরাসে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত ইউরোপ ও আমেরিকা। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আ’ক্রান্তের সংখ্যা ১১ লাখের বেশি। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১ হাজার ৬৯১ জন, আগের ২৪ ঘণ্টায় যা ছিল ১ হাজার ৮৯৭ জন। দেশটিতে আ’ক্রান্ত ১১ লাখ ৬০ হাজার ৭৭৪, মৃত্যু হয়েছে ৬৭ হাজার ৪৪৪ জনের।

যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় মৃত্যুতে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই ইউরোপের। ইতালিতে আ’ক্রান্ত ২ লাখ ৯ হাজার ৩২৮ জন। দেশটিতে মারা গেছেন ২৮ হাজার ৭১০ জন। স্পেনে আ’ক্রান্ত ২ লাখ ৪৭ হাজার ৩৬৫, মৃত্যু হয়েছে ২৫ হাজার ৩৮৫ জনের। ফ্রান্সে আ’ক্রান্ত ১ লাখ ৬৮ হাজার ১০৬, মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার ৭৬০ জনের।

যুক্তরাজ্যে আ’ক্রান্ত ১ লাখ ৮২ হাজার ২৬০ জন, মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ১৩১ জনের। রাশিয়ায় আ’ক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৭ জন, মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৮০ জনের।গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ৫৮ জন। ব্রাজিলে আ’ক্রান্ত ৯৭ হাজার ১০০ জন, মারা গেছেন ৬ হাজার ৭৬১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের।

ধীরে ধীরে সব খুলছে জার্মানি : করোনাভা’ইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২৩ মার্চ থেকে পুরোদমে লকডাউন কার্যকর করে ইউরোপের দেশ জার্মানি। করোনা সংক্রমণ এবং প্রাণহানির চূড়া পেরিয়ে আসায় ধীরে ধীরে অচলাবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরতে শুরু করেছে দেশটি।

সর্বশেষ দেশটির গির্জাগুলো পুনরায় চালু করে দেয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে জার্মান কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশের সব খেলার মাঠ, জাদুঘর এবং চিড়িয়াখানার মতো সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় খুলে দেয়া হবে। তবে এসব প্রতিষ্ঠান খুললেও দেশটির হোটেল ও রেস্টুরেন্ট সহসাই চালু হচ্ছে না।

ভারতে ভাঙল সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড : মাত্র ১ দিনের ব্যবধানে আবারও সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড গড়ল ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৬৪৪ জন। এ নিয়ে সেখানে মোট আ’ক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ২৬৩ জন।

রোববার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় ১ হাজার ৩০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৮৩ জন। এছাড়া, সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৬৮২ জন।ফলে দেশটিতে করোনামুক্ত হওয়া মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৩৩ জন। এখনও চিকিৎসাধীন ২৮ হাজার ৪৬ জন। গত এক সপ্তাহে ভারতে করোনায় আ’ক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজারের বেশি মানুষ। মারা গেছেন সাত শতাধিক।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *