মৃ’ত্যু পথযাত্রী বাংলাদেশীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করলো সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা !!

একজন প্রবাসী বাংলাদেশীর জন্য মানবিকতার অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা। করোনার লকডাউনে বিশ্বব্যাপী যখন বিমান যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত বাংলাদেশী এই শ্রমিকের জন্য তহবিল গঠন করে চার্টার্ড বিমানে তাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন তারা। দুরারোগ্য ক্যান্সারে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও জীবনের বাকিটা সময় সন্তানের কাছে কাটানোর প্রবল ইচ্ছে পূরণে সীমাহীন আনন্দে ভাসছেন বাবা রানা সিকদার।

এ দৃশ্য মৃত্যুর প্রহর গোনা এক হতভাগ্য বাবা ও সন্তানের ভালোবাসার বন্ধনের । মৃত্যু এখন কড়া নাড়ছে বাবা সিকদার রানার জীবনের দরজায় । দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আগে রেমিট্যান্স যোদ্ধা রানা সিঙ্গাপুরে কাজ করতেন। বেশ সুখেই চলছিল তার জীবন। কিন্ত হঠাৎ করেই ধরা পড়ে পাকস্থলীর ক্যান্সার, কিছুদিনের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো পেটে।শত চেষ্টায়ও বিফল ডাক্তাররা। করোনার কারণে তাকে দেশেও পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। কিন্তু বাবার মন কি এত অল্পে দমে যাবে? নিজের সন্তানকে শেষবারের জন্য দেখার ব্যাকুলতা রানার শরীরের যন্ত্রণাকে যেন আরো বাড়িয়ে তুলেছিল । ইচ্ছা ছিল শেষ কটা দিন পরিবারের সাথে থাকার ।

রানার এ ইচ্ছাশক্তি আর ভালোবাসার ব্যাকুলতা দেখে মন ভিজে যায় সিঙ্গাপুরের হাসপাতালের ডাক্তারদের । নিজেরা ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নেন। সফলও হন। অবশেষে একটি চাটার্ড বিমানে করে সিকদার রানাকে পৌঁছে দেন বাংলাদেশে । তার সাথে এসেছেন হাসপাতালটির দু’জন ডাক্তারও । পরে রানাকে নিয়ে যাওয়া হয় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিয়েটিভ কেয়ারে। একমাস ধরে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ, ভরসা কেবল স্যালাইন। হাসপাতালে রেখে বিশেষ কোন চিকিৎসা দেয়াও সম্ভব নয় রানার। তাই জীবনের বাকি দিনগুলো নিজের বাড়িতেই ছেলের সাথে কাটাতে চান এই মৃত্যুপথযাত্রী। সন্তানের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশী রানার ভালোবাসায় সাড়া দিয়ে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের এই মহতী উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এখন অনেকেই।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *