দেশের খবর

মোংলা থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে আম্ফান !!

খুলনার উপকূলীয় এলাকার মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে সাইক্লোন শেল্টারে। ইতিমধ্যে সুন্দরবনের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে সুপার সাইক্লোন আম্ফান। মোংলা বন্দর থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গেছে আম্ফান।

আম্ফানের প্রভাবে উপকূলজুড়ে কিছুক্ষণ পর পর ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সুন্দরবন উপকূলের নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।এতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে দুর্বল বেড়িবাঁধ। ফলে উপকূল সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে লক্ষাধিক মানুষ সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।

বুধবার (২০ মে) সকাল ৬ টায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর,বরগুনাসহ উপকূলীয় জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে, মোংলা বন্দরে অবস্থানরত ১১টি পণ্যবাহী জাহাজ, নৌযান ও ট্যুারিস্ট বোর্ড নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।খুলনা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, বেলা ৩ টার আবহাওয়ার বুলেটিনে বলা হয়েছে, সুপার সাইক্লোন আম্ফান মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার ও পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এটি ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে সুন্দরবন উপকূলের দিকে। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মোংলা বন্দরের কাছে পৌঁছে যাবে আম্ফান। বুধবার সারা রাত ধরে আম্ফান সুন্দরবন উপকূল অতিক্রম করবে।

আম্ফানের প্রভাবে গত মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মাঝেমধ্যে বইছে দমকাসহ ঝড়ো বাতাস। সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০-১৫ ফুট অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

তিনি জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুলনায় ৫০ মি.মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।এদিকে, উপকূলীয় দাকোপ ও কয়রা উপজেলার মানুষ বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের আশঙ্কায় রয়েছেন। অনেক জায়গায় মানুষ নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের ফাটল মেরামত করছে।

স্থানীয়রা জানান, কয়রা উপজেলার কয়রা সদর ইউনিয়ন, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন ও মহারাজপুর ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদ ও শাকবাড়িয়া নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।এরমধ্যে কপোতাক্ষ নদের গোলখালী থেকে দশালিয়া পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার ও শাকবাড়িয়া নদীর আংটিহারা থেকে মহরারাজপুর ইউনিয়নের পোবনা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

এছাড়া দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঢাকী নদীর বটবুনিয়া বাজার সংলগ্ন ৪০০ মিটার ও কামিনীবাসিয়া গাইনবাড়ি সংলগ্ন ৭০ মিটার বেড়িবাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙ্গে গেলে ব্যাপক ফসলহানিসহ লবণ পানিতে প্লাবিত হবে জনপদ।

দাকোপ উপজেলার পানখালী ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিউল আজম সেলিম জানান, পানখালী ইউনিয়নের পশুর নদীর খলিশা এলাকায় ১০০-১৫০গজ বেড়িবাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙ্গে ব্যাপক এলাকা লবণ পানিতে প্লাবিত হতে পারে।

পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল কাদের জানান, পানখালী পশ্চিমপাড়ায় ঝপঝপিয়া নদী সংলগ্ন প্রায় আধা কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।বুধবার সকালে স্থানীয় মানুষ নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পশুর নদীর খলিশা এলাকায় ১০০-১৫০গজ বেড়িবাঁধ মেরামত করেছে।

তিনি বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো মেরামত করা না হলে জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙ্গে ব্যাপক ফসলহানিসহ বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’সুন্দরবন সংলগ্ন ছুতারখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির জানান, তার ইউনিয়নে ২৭টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে।সকালে কিছু কিছু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসলেও আবহাওয়া ভালো দেখে তারা আবার বাড়ি চলে যায়। তবে, দুপুরের পর থেকে তারা আবার আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে।

কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির জানান, কয়রা সদর ইউনিয়নে ২৪ টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে।বেলা ১২টার পর থেকে মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আসা শুরু করেছে। বিকাল ৪টার মধ্যে সব মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসবে।এদিকে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত ১১টি পণ্যবাহী জাহাজ, নৌযান ও ট্যুারিস্ট বোর্ড নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ‘ইতিমধ্যে খুলনার লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

সূত্র-দ্যা বাংলাদেশ টুডে

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button