যাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন !!

মুমিনের এমন কিছু আমল আছে, যেগুলো পালন করলে ফেরেশতাদের দোয়া পাওয়া যায়। সেসব আমল থেকে ৭ আমল তুলে ধরা হলো:

৥ ওযূ অবস্থায় ঘুমানো ব্যক্তি: ঘুমানোর পূর্বে ওযু করা উত্তম অভ্যাস গুলোর একটি। ওযুর মাধ্যমে বাহ্যিক পবিত্রতার পাশাপাশি মানসিক প্রফুল্লতাও লাভ করা যায়। আর আল্লাহ তা’আলার ফেরেশতাগণ ঐ ব্যক্তির জন্য দরবারে ইলাহীতে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, যারা ওযু অবস্থায় নিদ্রা যাপন করেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় (ওজূ অবস্থায়) ঘুমায় তার সাথে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকে। অতঃপর সে ব্যক্তি ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার সাথেই আল্লাহতালার সমীপে ফেরেশতাটি প্রার্থনায় বলে থাকে, হে আল্লাহ! তোমার অমুক বান্দাকে ক্ষমা করে দাও, কেননা সে পবিত্রাবস্থায় ঘুমিয়েছিল।” (আল ইহসান ফি তাকরির সহীহ ইবনে হিব্বান ৩/৩২৮-৩২৯)

৥ উত্তম শিক্ষা প্রদান: ফেরেশতাগণ তাদের জন্যও দু’আ করেন,যারা মানুষকে কল্যাণকর ও ভাল কিছু শিক্ষা দিয়ে থাকেন। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে- “নিশ্চয় মানুষকে ভাল কথা শিক্ষা দানকারীর প্রতি আল্লাহ তা’আলা দয়া করে থাকেন এবং ফেরেশ্তাগণ, আসমান- জমিনের অধিবাসীগণ এমনকি গর্তের পিপীলিকা ও পানির মাছেরাও তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকে।” [সুনান আত তিরমিযী: হা/২৮২৫,৭/৩৭৯ -৩৮০,কথিত আলাবানীও এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন,দেখুন: সহীহ সুনানুত তিরমিযী: ২/৩৪৩]

৥ সালাতের জন্য মসজিদে অপেক্ষারত ব্যক্তি: আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মাঝে কোন ব্যক্তি যখন ওযূ অবস্থায় সালাতের অপেক্ষায় বসে থাকে সে যেন সালাতেই রত। তার জন্য ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে ক্ষমা করো, হে আল্লাহ! তুমি তার প্রতি দয়া করো।” (সহীহ মুসলিম ৬১৯)

৥ প্রথম কাতারে সালাত আদায়কারী: বারা’ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, “প্রথম কাতারের নামাযীদেরকে নিশ্চয়ই আল্লাহতালা ক্ষমা করেন ও ফেরেশতারা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।” (সহীহ ইবনে হিব্বান)

৥ রাসূল (সাঃ) এর প্রতি দুরূদ পাঠকারী: “যে ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওপর দুরূদ পাঠ করবে আল্লাহতালা তার ওপর সত্তর বার দয়া করেন ও তার ফেরেশতারা তার জন্য সত্তরবার ক্ষমা প্রার্থনা করবে। অতএব বান্দারা অল্প দুরূদ পাঠ করুক বা অধিক দুরূদ পাঠ করুক (এটা তার ব্যাপার)।” (সহীহ ইবনে হিব্বান)

৥ রোগী পরিদর্শনকারী: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে কোন মুসলিম তার অপর মুসলিম ভাইকে দেখতে যায়, আল্লাহতালা তার জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা প্রেরণ করেন, তারা দিনের যে সময় সে দেখতে যায় সে সময় থেকে দিনের শেষ পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে এবং সে রাতের যে সময় দেখতে যায় সে সময় থেকে রাতের শেষ পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে।” (সহীহ ইবনে হিব্বান ২৯৫৮)

৥ সালাতের স্থানে বসে থাকা: সুনান আবূ দাউদে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,“সালাতে তাক্বীরাতুত তাহরীমা কতিপয় হালাল বিষয়কে যেমন- কথা বলা,স্থান ত্যাগকরাসহ সালাত বহির্ভূত যাবতীয় কাজকর্ম) হারাম করে দেয়; আর ঐ হারাম বিষয়কে পুনরায় হালাল করে দেয় সালাম।” অর্থাৎ সালাম ফিরানোর পর মুসাল্লা (সালাতের স্থান) ত্যাগে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে সালামের পর মসাল্লায় বসে তাসবীহ পাঠ অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ একটি কাজ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *