যেভাবে ১০ মাসে বদলে গেল প্রবাসীর ভাগ্য !!

দেখতে অনেকটা মাঝারি সাইজের আপেলের মতো। রঙ আপেলের মতো সবুজ ও হালকা হলুদের ওপর লাল। খেতে অনেক মিষ্টি। অনেকটা বাউকুলের মতো দেখা গেলেও এটি মূলত কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল।

আপেল কুল বাংলাদেশে চাষ হলেও নতুন জাতের কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল চাষ দেশে এবারই প্রথম। প্রচলিত আপেল কুল ও বাউকুলের থেকে আকারে বড় কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল। গাছের ডালে ডালে ধরে এ কুল।প্রথম বারের মতো দেশে কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল চাষ করে সফল হয়েছেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের উত্তর বাঁশকান্দি গ্রামের বেলজিয়ামপ্রবাসী লিয়াকত ব্যাপারী।

ইউটিউবে কৃষিবিষয়ক প্রতিবেদন দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে বেলজিয়ামে থাকা অবস্থায় লিয়াকত ব্যাপারী সিদ্ধান্ত নেন দেশে এসে কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল চাষ করবেন। দেশে ফিরে তাই করেছেন তিনি। চারা রোপণের ১০ মাসের মাথায় দেখতে শুরু করেন সাফল্যের মুখ। তার বাগানে কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের বেলজিয়ামপ্রবাসী লিয়াকত ব্যাপারী ইউটিউবে কৃষিবিষয়ক প্রতিবেদন দেখে কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল চাষে উদ্বুদ্ধ হন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের উত্তর বাঁশকান্দি গ্রামে নয় লাখ টাকা ব্যয়ে চার বিঘা জমিতে ৮০০ কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুলের চারা ও ৫০০ মাল্টা গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।

রোপণের ১০ মাসের মাথায় চারাগুলো পরিপক্ব হয়। ১২ মাসের মাথায় গাছে ফুল আসে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গাছে ধরে কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল। প্রতি গাছে ১৫-২০ কেজি করে ধরেছে আপেল কুল। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে তার বাগানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি না হলে প্রত্যেক গাছে ৫০ কেজি করে ধরত কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল।

এরই মধ্যে ৭০ টাকা কেজি পাইকারিতে আপেল কুল বিক্রি শুরু করেছেন লিয়াকত ব্যাপারী। বেড়েছে ক্রেতাদের চাহিদা। তার বাগানে ৭-৮ জন কর্মচারী রয়েছেন। তারা গাছ ও বাগানের পরিচর্যা করেন।

বাগানের মালিক লিয়াকত ব্যাপারী বলেন, বেলজিয়ামে থাকা অবস্থায় ইউটিউবে কৃষিবিষয়ক প্রতিবেদন দেখে কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে চার বিঘা জমিতে নয় লাখ টাকা ব্যয়ে ৮০০ কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুলের চারা ও ৫০০ মাল্টা গাছের চারা রোপণ করি। গত বছরের ডিসেম্বরে গাছে ফুল আসে। জানুয়ারি মাসে ফল ধরে। এখন পাকাপোক্ত ফল বিক্রি শুরু করেছি। একেকটি গাছে ১৫-২০ কেজি ফল ধরেছে। পাইকারি ৭০ টাকা কেজিতে আপেল কুল বিক্রি করছি। বলা যায় ভাগ্য বদলে গেছে আমার। আমি সফল। গাছগুলো আরও পরিপক্ব হলে ১০ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যাবে। গাছে ফল ধরার পরিমাণও বাড়বে।

লিয়াকত ব্যাপারী বলেন, শিবচরের মাটিতে কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুলের বাম্পার ফলন হবে। যেমনটি হয়েছে আমার। এখানের মাটি অনেক ভালো। যে কেউ সহজে এটি চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমার এমন উদ্যোগের শুরুতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কোনো ধরনের সহযোগিতা পাইনি। তারা যদি এসব উদ্যোগে সহযোগিতা করেন তাহলে অনেকেই কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল চাষ করে ভাগ্য বদলে ফেলতে পারবেন।

জানতে চাইলে শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপ রায় বলেন, শিবচরের মাটিতে নতুন জাতের কাশ্মীরি নুরানি আপেল কুল চাষ করে প্রথমবারের মতো সাফল্য দেখিয়েছেন প্রবাসী লিয়াকত ব্যাপারী। সামনে কেউ এ ফল রোপণ ও চাষ করতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করা হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *