যে কারণে‌ জানালা দিয়ে লাফিয়ে ম’রছেন একের পর এক রুশ ডাক্তার !!

করোনা পরিস্থিতি ভ’য়াবহ হয়ে উঠছে রাশিয়ায়। এই সপ্তাহে দেশটিতে কভিড -১৯ সং’ক্রম’নের হার সবচেয়ে বেশি। ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্যকে টপকে ইউরোপের সর্বোচ্চ করোনা রোগী এখন ভ্লাদিমির পুতিনের দেশে।এ সময়ে দেশটিতে করোনার লড়াইয়ে সামনের সারির যো’দ্ধা ডাক্তারদের মাঝে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা গেছে। গত দুই সপ্তাহে দেশটিতে অন্তত তিনজন চিকিৎসককে হাসপাতালের জানালা দিয়ে নিচে লাফিয়ে পড়তে দেখা গেছে।

এদের মধ্যে ২ জন মা’রা গেছেন। গু’রুতর আ’হত অবস্থায় আরেকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর এসব ঘটনায় রাশিয়ার হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের পরিবেশ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

ব্রিটিশি ট্যাবলয়েড ইনডিপেন্ডেন্ট জানাচ্ছে, তিনটি ক্ষেত্রেই করোনভা’ইরাস চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ডাক্তারদের মা’রাত্ম’ক দ্ব’ন্দ্বে’র প্রমাণ রয়েছে। কিছু আন্তর্জাতিক মিডিয়া এটাকে ট্রাজেডি হিসাবে বর্ণনা করে পাঠকদের প্ররোচিত করছে। ফলে রাশিয়ান স্বাস্থ্যকর্মীরা যে সরকার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিপীড়নের শিকার সেটা আড়ালে পড়ে যাচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্থদের বন্ধু এবং সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপে ইনডিপেন্ডেন্ট জানতে পেরেছে, সেখানে মেডিক্যাল কর্মীরা অসহনীয় চাপের মধ্যে কাজ করছে। ভুক্তভোগীরা কমপক্ষে দুটি কারণে আ’ত্মহ’ত্যা’র উপায়ে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। প্রথমত অদৃশ্য ঘা’ত’কের মুখোমুখি হয়ে কাজ করার সময় অপর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক সুযোগ-সুবিধাকে অগ্রাহ্য করা ও পর্যাপ্ত চাপ দেওয়া।

ভোরোনেজ শহরে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর জরুরি চিকিৎসা দিয়ে থাকেন আলেক্সান্ডার শুলেপভ। গত শনিবার (২ মে) হাসপাতালের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়েছিলেন তিনি। তার অবস্থা এখন আ’শঙ্কাজ’নক। নোভোসমান্সকায়া হাসপাতালের তৃতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন শুলেপভ। ওই হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন তিনি। নিজের দে’হে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিলো। চিকিৎসার জন্য শুলেপভকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত ২২ এপ্রিল। একইদিন তিনি ও তার এক সহকর্মী আলেক্সান্ডার কোসিয়াকিন অনলাইনে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়, করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও শুলেপভকে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।

কোসিয়াকিন এর আগে সুরক্ষা সরঞ্জামাদির ঘাটতি নিয়ে হাসপাতাল প্রশাসনের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলেন। ভু’য়া খবর ছড়ানোর অ’ভিযো’গে পু’লি’শ তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলেছেন কোসিয়াকিন। ‘আমি যতটুকু জানি, শুলেপভ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে আছে, তার অবস্থা গু’রুত’র। সর্বশেষ তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল ৩০ এপ্রিল। আমরা একে অপরের খোঁজখবর নিয়েছি তখন। ও ভালো বোধ করছিলো এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। তবে হঠাৎ করেই এসব ঘটে গেলো। কেন এসব হলো তা স্পষ্ট নয়। অনেক প্রশ্নের উত্তর আমারও জানা নেই।’বলেন তিনি।

শুলেপভ হলেন গত দুই সপ্তাহে হাসপাতালের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়া তৃতীয় স্বাস্থ্যকর্মী। এর আগে সাইবেরীয় শহর ক্রাসনোইয়ারস্ক-এর একটি হাসপাতালের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়েছিলেন সেখানকার ভারপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসক এলেনা নেপোমনিয়াশছায়া। এক সপ্তাহ ধরে আইসিইউতে চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ১ মে মৃ’ত্যু হয় তার। নেপোমনিয়াশছায়াও হাসপাতালের সুরক্ষা সরঞ্জামাদির ঘাটতি নিয়ে হতা’শা প্রকাশ করেছিলেন।

গত ২৪ এপ্রিল স্টার সিটির ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল সার্ভিসের প্রধান নাতালিয়া লেবেদেভা হাসপাতালের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে গু’রুত’র আ’হ’ত হন। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় মা’রা যান তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা স’ন্দেহে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিলো।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *