যে সকল ব্যক্তিদের করোনাভাইরাস হওয়ার আশঙ্কা বেশী !!

চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে হুবেই প্রদেশে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৩২ জনের। পুরো দেশজুড়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ হাজার ৩৫৭ জন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৮৬৮ জন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) চীনের মধ্যপ্রদেশ হুবেইয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।

তবে এ ভাইরাস নিরাময়ের কোনো টিকা বা ওষুধ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তাই এই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে সচেতন হওয়া। তবে আপনি জানেন কী কাদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। চীনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের করা এক বিস্তৃত গবেষণা থেকে জানা গেছে, হান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে বয়োবৃদ্ধ অন্যান্য রোগে ভোগা ব্যক্তিদের মৃত্যুঝুঁকিই সবচেয়ে বেশি। দেশটির সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিসিডিসি) কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষের তথ্য নিয়ে এ গবেষণা পরিচালনা করে। করোনাভাইরাস নিয়ে এটিই সবচেয়ে বড় গবেষণা। সিসিডিসির গবেষণার প্রাথমিক ফলে দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে ৮০ শতাংশের দেহেই সংক্রমণের মাত্রা ‘মৃদু’; বৃদ্ধ ও অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এমনকি আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকির রয়েছে।

বিস্তৃত এ গবেষণা থেকে পাওয়া গেছে, চীনের অন্যান্য অঞ্চলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তদের মধ্যে গড়ে যেখানে মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশের মৃত্যু হচ্ছে, হুবেইতে তখন প্রতি ১০০ আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে মৃত্যুর হার হচ্ছে ২ দশমিক ৯। সব মিলিয়ে কভিড-১৯ রোগে মৃত্যুর হার ২ দশমিক ৩ শতাংশ বলেও সিসিডিসির এ গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে ৮০ দশমিক ৯০ শতাংশের সংক্রমণই ‘মৃদু’; ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশের সংক্রমণ তীব্র; ৪ দশমিক ৭০ শতাংশের পরিস্থিতি সংকটাপন্ন। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুহার ৮০ বা তদুর্ধ্ব ব্যক্তিদের, ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। শূন্য থেকে ৯ বছর বয়সীদের মধ্যে কারও মৃত্যুর খবর নেই; ৩৯ বছর পর্যন্তও এ হার মাত্র শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি বাড়তে দেখা গেছে। কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত চল্লিশোর্ধ্বদের মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ, পঞ্চাশোর্ধ্বদের এক দশমিক ৩০ শতাংশ; ষাটোর্ধ্বদের ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ, আর ৭০-এর ঘরে থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ৮ শতাংশ। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় বেশি মারা যাচ্ছে বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে। আক্রান্ত প্রতি ১০০ পুরুষের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ দশমিক ৮০ জনের; নারীদের ক্ষেত্রে এ হার এক দশমিক ৭০ শতাংশ।

গবেষণায় অসুস্থদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্তদের মৃত্যু ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি আর ডায়াবেটিক, শ্বাসযন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী রোগ ও উচ্চ রক্তচাপ। নিউমোনিয়াসদৃশ এ ভাইরাসে মঙ্গলবার উহানের এক হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসকের মৃত্যুর খবরের মধ্যেই সিসিডিসির এসব তথ্য মিলল। ৫১ বছর বয়সী লিউ জিমিং ছিলেন উহানের উচাং হাসপাতালের পরিচালক; উপদ্রুত শহরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই এ হাসপাতাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *