শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দিচ্ছে ব্রয়লার মুরগি !!

ঘরে হোক বা বাইরে পোল্ট্রি বা ব্রয়লার মুরগির রেসিপি এখন অনেকেরই প্রথম পছন্দ। চিকেন ফ্রাই, চিকেন রোস্ট, চিকেন উইং, চিকেন নাগেটস- চিকেন বার্গার, গ্রিল চিকেন থেকে শুরু করেন নতুন জামাইয়ের প্লেট পর্যন্ত মুরগির আধিপত্য। আস্ত মোরগ না হলে তো বিয়েটাই অপূর্ণঅ। অপূর্ব স্বাদ আর তৃপ্তিতে রসনার কাজটি সারতে মুরগির তুলনা নেই। এর পাশাপাশি সেই আদিকাল থেকেই মুরগি ডিম এবং মাংস দিয়ে আমাদের প্রোটিনের অভাব পূরণ করে আসছে।

এর মাংসের রেসিপির অভাব নেই। যখন যতবারই খাওয়া হোক না কেন, মুরগির অনন্য স্বাদ আমাদের মুখে লেগে থাকে। কিন্তু মুরগির স্বাদ পেতে জীবন যদি ঝুঁকির মুখে পড়ে, তাহলে এ নিয়ে ভাবাটা জরুরি। এমনই আরও কত কিছু! কিন্তু অনেকেই জানেন না, এই ‘ব্রয়লার প্রীতি’ মানবদেহের মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে।

ব্রয়লার মুরগি নিয়মিত খেলে অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ শরীরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হবে। শুধু তাই নয়, আমাদের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও নষ্ট হয়ে যেতে পারে ধীরে ধীরে। দীর্ঘদিনের গবেষণায় এমনটাই দাবি করেন ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস।

জিনিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, অরিন্দম বিশ্বাস জানান- আসলে ইদানীং আমরা যত মুরগি খাই তার প্রায় সবই আসে কোনও না কোনও পোল্ট্রি খামার থেকে। আর প্রায় সব পোল্ট্রি খামারেই মুরগির স্বাস্থ্য দ্রুত বাড়াতে, বেশি মাংস পেতে মুরগির খাবারের সঙ্গে এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেওয়া হয়। এই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবে মানুষের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কার্যক্ষমতা দিনে দিনে হ্রাস পেতে থাকে। এই ভাবে চলতে থাকলে একটা সময় হয়তো অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধই শরীরে কোনও রকম ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে তা ঠেকাতে ব্যর্থ হবে। সম্প্রতি লন্ডনের ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজিম-এর চালানো একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ ভারত, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়ার মতো একাধিক দেশে পোল্ট্রি খামারে মুরগির খাবারের সঙ্গে উচ্চ মাত্রায় কোলিস্টিন নামের একটি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।

ওই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, বাজারে উপলব্ধ প্রায় সব প্রক্রিয়াজাত মুরগির মাংসেই উচ্চ মাত্রায় কোলিস্টিনের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন’-এর (ডব্লিউএইচও) যে বিধি-নিষেধ রয়েছে, তা যে কোনও ভাবেই মানা হচ্ছে না তারই প্রমাণ মিলেছে এই সমীক্ষায়।

কীভাবে বিপদ এড়িয়ে চলা যাবে এ বিষয়ে চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানান, পোল্ট্রি বা ব্রয়লারের মুরগি যতটা সম্ভব কম খান। আর যদি খেতেই হয় ভাল করে ফুটিয়ে, সেদ্ধ করে খাওয়াই ভাল।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *