সন্তান জন্মের খবর পেলেই ছুটে গিয়ে গাছ লাগান যিনি !!
ব্যতিক্রমীভাবে গাছ লাগিয়ে সবার নজর কেড়েছেন গোপাল চন্দ্র বর্মণ। গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় কোনো শিশু জন্ম নেয়ার খবর পেলেই ছুটে যান সেখানে। সেই বাড়িতে নিজ হাতে একটি গাছ লাগান। গত দশ বছরে ফলজ, বনজ ও ঔষধিসহ অন্তত ৫ হাজার গাছের চারা লাগিয়েছেন এভাবেই। তার ই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসীসহ পরিবেশ আন্দোলনের নেতারা।
গোপাল চন্দ্র বর্মণ, পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। এলাকার সবাই তাকে চেনেন গাছ প্রেমী হিসেবেই। নিজে গাছ লাগান এবং অন্যকে গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করাই তার নেশা। শিক্ষকতার পাশাপাশি এলাকার যে কোনো প্রান্তে নবজাতক জন্ম নিলেই ছুটে যান সেই বাড়িতে। বিনামূল্যে নিজ হাতে রোপণ করেন একটি গাছ। ছেলে শিশু জন্ম নিলে ফলের গাছ আর মেয়ে শিশু জন্ম নিলে লাগান কাঠ জাতীয় গাছ। এভাবে গত দশ বছরে সাঘাটা উপজেলায় লাগিয়েছেন বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত ৫ হাজার গাছ। গোপাল চন্দ্র বলেন, ‘একটা শিশু যখন জন্মগ্রহণ করে তখন সে নিষ্পাপ। আমি শিশুদের সঙ্গে মিল রেখে গাছের চারা দিচ্ছি। মেয়েদের বিয়ের সময় গাছ কেটে কিছু টাকা পাওয়া যায় যা তাদের সহযোগিতায় আসে। ছেলেদের ক্ষেত্রে আমি ফলের গাছ দেই যাতে তারা ফল খেতে পারে।’
গোপাল চন্দ্রের লাগানো অনেক গাছে ধরেছে ফল, খাচ্ছেন সবাই। এলাকাবাসী এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। তার দাবি, বাজার থেকে কেনা প্রায় সব ফলেই রয়েছে বিষ। তাই নিজ হাতে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান তিনি। গোপাল চন্দ্রের কাজটি বাংলাদেশের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। এ কাজে গোপালকে অনুসরণ করা উচিত বলে মনে করেন পরিবেশ আন্দোলনের গাইবান্ধার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জনি। তিনি বলেন, এটা খুবই প্রশংসনীয়। এটা এলাকার জন্য, দেশের জন্য দৃষ্টান্তমূলক বলে আমি মনে করি। আমাদের উচিত তাকে অনুসরণ করা। এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ একদিন উপজেলা, জেলার গণ্ডি পেরিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে- এমনটাই প্রত্যাশা গোপাল চন্দ্রের।