সীমান্তের দুই পাশেই ধ’র্ষণের শিকার অনুপ্রবেশকারী নারীরা !!

সীমান্ত পারাপারে দুদিকেই ধ’র্ষণের শিকার হচ্ছেন অনুপ্রবেশকারী নারীরা। বিতর্কিত নাগরিকত্ত আইন পাশ হওয়ায় গত শনিবার ভারতের ব্যাঙ্গালোর থেকে আসা চারজন অনুপ্রবেশকারী বিজিবির হাতে আটক হন। ভারত থেকে আসার সময় মহেশপুর সীমান্তে এপারে এবং ওপারে সর্বস্ব লুণ্ঠন ছাড়াও উভয় পারে নারীরা ধ’র্ষণের শিকার হয়েছেন বলে তথ্য দেন তারা।

ভারত থেকে অনুপ্রবেশকারীদের পারাপারে মহেশপুর সীমান্তে একটি শক্তিশালী মানবপাচারকারী সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পারাপারের সময় দুই দেশের দালালচক্র অনুপ্রবেশকারীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের সবকিছু লুণ্ঠন করে নেওয়া ছাড়াও যুবতী নারীদের রাতের আঁধারে আশ্রয় দেওয়ার নামে নির্জন এলাকায় নিয়ে ধ’র্ষণ করছে। তারপর সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিঃস্ব হাতে তাড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানায় সীমান্তে একটি সুত্র। জানা গেছে, ভারত থেকে যারা আসছেন তাদের হাওড়া রেল স্টেশনে পরিমল সিন্ডিকেটের লোকজন রিসিভ করে। তারা বিশেষ গাড়িতে করে তাদের বাংলাদেশের সীমান্তে হাসখালী থানার বন্যাবড়ে ও রামনগর গ্রামে নিয়ে রাখে। এখানে এজাজুলের ছেলে মোজাফ্ফরের নেতৃত্বে তার লোকজন বাংলাদেশের বাগাডাঙ্গা সীমান্তে সাইফুলের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় যুবতী মেয়েদের মোজাফ্ফর ও তার লোকজন ধ’র্ষণ করছে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

অপরদিকে বাংলাদেশে প্রবেশের পর সাইফুল ও তার লোকজন একই ঘটনা ঘটাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাবুল নামে এক দালালকে গত ৪দিন আগে ভোর বেলা ১২/১৩জন অনুপ্রবেশকারী নিয়ে মাঠ দিয়ে পারাপার হতে দেখেছেন। তারা জানান, এদের মধ্যে কয়েকজন নারী দালালদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নির্যাতিত নারীরা এ ঘটনার কথা বিভিন্নভাবে তাদের জানিয়েছে। ভারতের হাসখালী থানার রামনগর গ্রামের সাইজুদ্দিন জানান, এই গ্রামের মোজাফ্ফরের নেতৃত্বে মতি, হাসান, নাসিরসহ ১০/১২ জন এ সকল পারাপার করে থাকে। গত ১৮ই ডিসেম্বর ২৪/২৫ জনকে রাতের আঁধারে পার করার সময় ২/৩জন মহিলাকে তারা ধ’র্ষণ করে। নির্যাতিত ওই নারীরা নিরাপদে পার হওয়ার আশায় এবং ভয়ে মুখ খোলেননি। যারা বিজিবির হাতে ধরা পড়ে তাদের কাছ থেকে গোপনীয়ভাবে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

এদিকে এলাকাবাসী জানায়, মহেশপুর উপজেলার বাগাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সাত্তার ঝড়ুর ছেলে সাইফুল ইসলাম, আফিল উদ্দিনের ছেলে হাফি, বাকোসপোতা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে জাহাঙ্গীর, সলেমানপুর গ্রামের মিজা উদ্দিনের ছেলের নেতৃত্বে একটি বড় সিন্ডিকেট অর্থের বিনিময়ে মানুষ পারাপার করে আসছে। তারা দুই দেশে বড়ো ধরণের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। গত এক মাসে এ ধরণের অনুপ্রবেশকারীদের পারাপার করে তারা আঙুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছে। এ বিষয়ে ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল কামরুল আহসান জানান, সীমান্তে অনুপ্রবেশ বন্ধ করার জন্য তারা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। এছাড়া দালাল চক্রদের বিষয়ে তারা খোঁজ-খবর নিয়ে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। গত শনিবার পর্যন্ত এ সীমান্তে ৩৩০জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া গোপন পথে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ পার হয়েছে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *