সেতুর অভাবে, খালে সাঁতার কেটে নিতে হলো মরদেহ !!

সেতুর অভাবে খালের পানিতে সাঁতার কেটে মৃতদেহ নিতে হলো স্বজনদের। হৃদয় বিদারক এ ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম জনপদ থোয়াংগেরকাটা শিয়া পাড়া গ্রামে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামের বাসিন্দা মোজাফ্ফর আহমদ গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মারা যান। পরদিন শনিবার তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয় পারিবারিক কবরস্থান সংলগ্ন মসজিদ প্রাঙ্গনে।

গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল জব্বার জানান, জানাজার জন্য মোজাফ্ফর আহমদের মরদেহ মজজিদ প্রাঙ্গনে নেওয়ার সময় হরিণ খাইয়া নামক খাল পার হতে গিয়ে বিপাকে পড়েন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। কারণ, খালের উপর স্থানীয়দের তৈরি সাঁকো থাকলেও তাতে মরদেহ নেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে খালের পানিতে নিহতের স্বজনরা সাঁতার কেটে লাশ পার করেন।

মেম্বার আবদুল জব্বার আরও জানান, দুই মাস আগে রামু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের একজন প্রকৌশলী এ স্থানটি পরিদর্শন করেন। তবে এরপর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

থোয়াংগেরকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য আবদুল আলিম জানিয়েছেন, পার্বত্য বান্দরবানের সীমান্তবর্তী ও দুর্গম এলাকা হওয়ায় এ গ্রামটি খুবই অবহেলিত। দীর্ঘদিন এলাকাবাসী এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও তা বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এর ফলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এখানে দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। শুস্ক মৌসুমেও চাষাবাদের পানির কারণে এ খালটি ডুবে থাকে। যে কারণে বর্ষা ও শুষ্ক উভয় মৌসুমেই মরদেহ নেওয়া এবং জনসাধারণ চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে আসছে।

রামু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসউদ রানা সায়েম জানান, হরিণ খাইয়া খালের এ স্থানটি তিনি দুই মাস আগে দেখতে যান। কিন্তু ওই স্থানে দুপাশে সংযোগ সড়ক নেই। এ কারণে এখানে বিধিমোতাবেক সেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে খালের দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে ওই স্থানে সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হবে।

এদিকে খালের পানিতে সাঁতার কেটে মৃতদেহ পারাপারের এ হৃদয় বিদারক ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ক্ষুব্ধ জনতা অবিলম্বে এ খালে সেতু নির্মাণ করে জনদুর্ভোগ লাঘবের দাবি জানিয়েছেন।

সূত্রঃ আমাদের সময়

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *