সৌদিতে নিহত শাকিল – মেহেদীর রঙ মুছে যাওয়ার আগেই বিধবা হলেন নববধূ !!

সৌদি আরবের জেদ্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শাকিল ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরমছলন্দ উত্তর নয়াপাড়া গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে। তারা দুই ভাই ও এক বোন। নিহত শাকিল তিন ভাই বোনের মধ্যে সবার বড়। নিহত শাকিল মিয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মা-বাবা- ভাই-বোনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। একমাত্র উপাজর্নক্ষম ছেলের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে দিশেহারা পরিবারের সদস্যরা। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

২০১৫ সালে জমিজমা বিক্রি ও ঋণ করে ভাগ্য ফেরাতে সৌদি আরব গিয়েছিল শাকিল। আট মাস মাস আগে বাড়িতে এসে বাবা-মায়ের জন্য নতুন ঘর তৈরি করে শাকিল। বাড়ি তৈরী করেই বিয়ে করেছিল শাকিল। শাকিলের স্বজনদের দাবি ছেলের লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণের সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন স্বজনেরা।

নিহত শাকিলের ছোট ভাই শামিম বলেন, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারী) রাত একটার সময় তারা কাজে গিয়ে বুধবার দুপুর বারোটার সময় কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার মুহূর্তে এই দুর্ঘটনা ঘটে। শামিম আরও বলেন, ভাই কিছু দিন আগে ছুটিতে বাড়ি-ঘর তৈরী করে। মামাতো বোন হোসনাকে বিয়ে করে সৌদিতে আরবে ফিরে যায়। আসার পূর্বে ব্যাংক থেকে ঋণ করে বসতঘর তৈরি করেছিল। এরই মাঝে চিরমুক্তি নিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন শাকিল।

নিহত শাকিলের স্ত্রী হোসনা আক্তার বলেন, আমাদের বিয়ে হয়েছে মাত্র আট মাস হয়েছে। ছুটিতে এসে বিয়ে করে আবার সৌদিতে ফিরে গেছে। কথা দিয়েছিল আবার ফিরে আসবে। সে তো আর ফিরবে না, ফিরবে লাশ হয়ে। আমার স্বামীকে আর পাব না কিন্তু, আমার মৃত স্বামীর লাশটি যেন দেখতে পারি, আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমার স্বামীর লাশটি আমাদের কাছে পাঠান। শেষবারের মতো যেন তাকে দেখতে পারি। নিহত শাকিলের মা রাশিদা খাতুনের কান্না যেন থামছেই না। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার ছেলের লাশটা আমি দেখতে চাই। লাশটা এনে দেন।

এর আগে বুধবার (২৯ জানুয়ারী) দুপুরে সৌদি আরবের জেদ্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন জন বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতির আউলাতৈল গ্রামের ফোরকান আলীর ছেলে আল-আমিন, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও এর কামাল উদ্দিন এর ছেলে শাকিল মিয়া এবং নরসিংদী জেলার মনোহরদীর উত্তর কাচিকাটা গ্রামের কামাল মিয়ার ছেলে কাওছার মিয়া।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *