সৌদি প্রবাসী বরসহ ১০ জনের একসঙ্গে জানাজা !!
গত বৃহস্পতিবার রাতে হবু কনেকে আংটি পরাতে গিয়ে হবিগঞ্জে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বরসহ নিহত ১০ জনের জানাজা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার সকালে জানাজা শেষে নিহতদের মধ্য সাতজনকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। অন্য তিনজনের মরদেহ নিজ এলাকা বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে ভোরে হবিগঞ্জ থেকে নিহত ১০ জনের মরদেহ ফতুল্লার পাগলা মুসলিমপাড়া ও চিতাশাল নিয়ে আসা হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল ৯টায় পাগলা শাহি মহল্লা কবরস্থানে পাঁচজন ও দেলপাড়া কবরস্থানে দুইজনকে দাফন করা হয়। আর বাকি তিনজনের মরদেহ বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহতদের মরদেহ বাড়িতে আনার সঙ্গে সঙ্গে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। মরদেহ বাড়িতে আসার সংবাদে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ তাদের বাড়িতে ছুটে আসে। একসঙ্গে ১০ জনের মৃ’ত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে এসেছে। কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু ও প্যানেল চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার নিহতদের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের সান্ত্বনা দিয়েছেন।
এদিকে নিহতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পাগলা কুসুমপাড়া এলাকার সৌদি প্রবাসী হবু বর ইমন খাঁন (২৬), তার বাবা আব্বাস উদ্দিন খাঁন (৫৫), তার ভাই রাব্বি খাঁন (২৩), মামাতো ভাই রাজিব আহমেদ (২৭), খালাতো ভাইয়ের বউ আসমা বেগম (২৮), চাচাতো ভাই খলিল (২৫), হাজী মহসীন (৭০), ইমরান মিয়া (২৪), মামী সুমনা বেগম (২৮) ও নিহত সুমনা বেগমের শিশু সন্তান খাদিজা আক্তার (৪)।
জানা যায়, ইমনের স্থায়ী ঠিকানা বরিশালে। কিন্তু থাকতেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়। সেখান থেকে স্বজনদের নিয়ে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হবু কনেকে আংটি পরাতে যাচ্ছিলেন।
এদিকে নিহতদের মধ্যে আব্বাস উদ্দিন, ইমন, রাব্বী, রাজিব ও হাজী মহসীনের মরদেহ দাফন করা হয় পাগলা শাহি মহল্লা কবরস্থানে। আর সুমনা ও তার শিশু সন্তান খাদিজার মরদেহ দাফন করা হয় দেলপাড়া কবরস্থানে। অন্যদিকে ইমরান, খলিল ও আসমার মরদেহ বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের মরদেহ দাফন করা হবে।
এ ব্যাপারে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও পাগলা শাহি মহল্লা কবরস্থান কমিটির সভাপতি আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘আব্বাস উদ্দিন আমার প্রতিবেশি। তিনি একটি ব্যাংকে চাকরি করতেন। তার ছেলে ইমন কাতার থাকতো। ইমনের বিয়ে পাকাপোক্ত করতে গত ৫ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে আব্বাস তার ছেলেসহ আত্মীয়-স্বজন নিয়ে সুনামগঞ্জে পাত্রী দেখতে রওনা হন। কিন্তু পথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে বাবা-ছেলেসহ ১০ জনের মৃ’ত্যু হয়েছে। শনিবার ভোরে তাদের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি একসঙ্গে এতো লোকের জানাজায় কখনও অংশগ্রহণ করিনি। তাদের জানাজায় শরিক হয়ে নিজের আবেগকে সামলাতে পারিনি।’